মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি পেল পাঁচ প্রতিষ্ঠান

নির্মাণ শুরুর প্রায় সাড়ে তিন বছর পর কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ দিয়েছে দেশের প্রথম সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের অর্থনৈতিক অঞ্চল মোংলা ইকনোমিক জোন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2019, 10:31 AM
Updated : 14 Oct 2019, 01:15 PM

বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের কাছে ২০৫ একর জমি নিয়ে গঠিত এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রথম ধাপেই ৪৪ শতাংশ ভূমি বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানিয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক ইকনোমিক জোন কর্তৃপক্ষ।

সোমবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভূমি বরাদ্দ চুক্তি হয়, যার চারটিই এনার্জিপ্যাকের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে রয়েছে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ইউনিলিভারের অন্যতম পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নাগা লিমিটেড।

অর্থনৈতিক অঞ্চলের সর্ব পশ্চিমে ১১ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে নাগা। এছাড়া শিকদার গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক পেট্রোলিয়ামকে আট একর, এনার্জিপ্যাককে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আট একর, শিকদার গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক স্টিলকে ২২ একর এবং মোটর সাইকেল সংযোজনের জন্য একটি কোম্পানিকে ১৪ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংক ও শিকদার ইনস্যুরেন্সকে শাখা খোলার জন্য ছোট আকারের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয় এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে। 

যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ ও রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য দেশীয় প্রতিষ্ঠান শিকদার গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক ইকনোমিক জোনকে নিয়োগ করে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বেজা।

সোমবার প্রথম ধাপে পাঁচ কোম্পানির কাছে ভূমি বরাদ্দ উপলক্ষে বিনিয়োগ উন্নয়ন বা ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন শীর্ষক কর্মসূচি পালন করে বেজা ও পাওয়ারপ্যাক।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বেজার নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আইয়ুব বক্তব্য রাখেন। পাওয়ারপ্যাক ইকনোমিক জোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রনো হক শিকদার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সালমান এফ রহমান বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। মূলত বঙ্গবন্ধুর ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প করপোরেশন বা বিসিক থেকে বিশেষ শিল্পাঞ্চলের ধারণা নেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমন ধারণা থাকলেও বাংলাদেশে এর বিশেষত্ব হলে এখানে দেশভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।

সুন্দরবনের কাছে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে বিভিন্ন মহলের উদ্বেগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু ও পরিবেশ নিয়ে অত্যন্ত সচেতন এবং সতর্ক। সুন্দরবনের পাশে পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে এই ধরনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হত না। এখনও কোনো পরিবেশগত ঝুঁকি আছে কিনা তা নিয়মিত খোঁজ রাখা হবে।

সুন্দরবনের কাছে হওয়ার কারণে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে কারখানা স্থাপনের ক্ষেত্রে বেশি সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ।

পবন চৌধুরী বলেন, ২০১৫ সালে জোর গতি নিয়ে যাত্রা শুরুর পর পদে পদে তাদের বাধার সম্মুখিন হতে হয়েছিল। শুরুতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব অনেকে বুঝে উঠতে পারেননি। এখন সারাদেশে অন্তত ২৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ চলমান আছে।

মোংলা ও সিলেটের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রসঙ্গ তুলে তিনি আরও বলেন, মোংলার জন্য দুইবার দরপত্র আহ্বান করেও বেজা ব্যর্থ হয়েছিল। শ্রীহট্টতেও খুব সামান্য টাকার বিনিময়ে জমি চাওয়া হয়েছিল শুরুতে। এখন সেই পরিস্থিতি একেবারেই কেটে গেছে। পদ্মাসেতুর কাজ সম্পন্ন হলে এই অঞ্চলে শিল্প স্থাপন হবে সবচেয়ে লাভজনক।

অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক সালাউদ্দিন বলেন, মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল এখন সম্পূর্ণভাবে শিল্প স্থাপনের জন্য প্রস্তুত। এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে ইউনিলিভার।