সোমবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু।
তিনি বলেন, গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০১৯ উপলক্ষে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে।
“এ সময় ইলিশ ধরার উপর নির্ভরশীল জেলেদের খাদ্য সহযোগিতা দেওয়া হবে।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ এবং জাটকা ধরা নিষিদ্ধ থাকার সময়ে ওইসব এলাকার জেলেদের প্রতি পরিবারকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা হিসেবে।
ডিম পাড়ার মৌসুম হওয়ায় ‘মা’ মাছ সংরক্ষণের জন্য এই ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ করেছে সরকার।
এই ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাত, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
এই নিষেধাজ্ঞার কারণ ব্যাখ্যা করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “প্রধানত আশ্বিনের পূর্ণিমার চার দিন আগে এবং পূর্ণিমার পর ১৮ দিন পর্যন্ত সময়ে মা ইলিশ ডিম ছাড়ে।”
মা-ইলিশ এই মৌসুমে ‘৮০ শতাংশ’ ডিম ছাড়ে জানিয়ে তিনি বলেন, “মাছ ধরায় বিধিনিষেধের ফলে ইলিশ মাছের উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে। মৎস্য খাতের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ইলিশ মাছের যে আকাল ছিল, এখন আর তা নেই।”
বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া তথ্যের বরাতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইলিশ আহরণ ২২ দিন বন্ধ রাখায় গত বছর প্রায় ৪৮ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়।
এই ২২ দিন মাঠ পর্যায়ে অভিযানে সহায়তা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলায় অতিরিক্ত ৪৭ জন কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে সহযোগী সকল সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি জাতীয় মনিটরিং টিম গঠন করেছে মন্ত্রণালয়।
৩৬টি জেলার সব নদ-নদীতে দিনে ও রাতে অভিযান এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে জানিয়ে আশরাফ আলী বলেন, এ সময় স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, র্যাব, পুলিশ, নৌ-পুলিশ এবং মৎস্য অধিদপ্তর সম্মিলিতভাবে অভিযান পরিচালনা করবে।
সাংবাদিকদের প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ইলিশ রপ্তানি করার চিন্তাভাবনা সরকারের নেই। ভারতকে যে ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ দেওয়া হয়েছে তা পূজার শুভেচ্ছা হিসেবে।”