অনমনীয় ঋণে অনুদানের হার কমাল সরকার

বৈদেশিক ঋণের গতি বাড়ানোর লক্ষ্যে অনমনীয় ঋণে অনুদানের হার কমিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2019, 03:06 PM
Updated : 2 Oct 2019, 03:06 PM

‘গ্রান্ড এলিমেন্টের’ ঊর্ধবসীমা ৩৫ শতাংশের বদলে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাবে বুধবার সায় দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতা বাড়ার ফলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া গেছে।

যে সব ঋণে অনুদানের পরিমাণ ৩৫ শতাংশের কম সে সব ঋণ অনমনীয় ঋণ হিসেবে বিবেচিত হয়।

বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ায় বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশ বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের সুদ হার বাড়িয়েছে।

বিষয়টি উল্লেখ করে বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়, তারপরও ৩৫ শতাংশ অনুদানের ফলে ঋণসমূহ অনমনীয় হয়ে যাচ্ছে এবং চুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে ‘অনমনীয় ঋণ বিষয়ক স্থায়ী কমিটি’র অনুমোদন প্রয়োজন হচ্ছে। ফলে সার্বিকভাবে বৈদেশিক ঋণ আহরণের পরিমাণ শ্লথ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “এখন আমাদের অবস্থা ভালো হয়ে গেছে। আগে নিম্ন আয়ের দেশ ছিলাম, এখন উঁচু জায়গায় পৌঁছালাম। ঋণের মধ্যে অনুদান ৩৫ শতাংশ থাকলে আমরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পেতাম না।

“আগে আমরা অনুদানের পরিমাণটা দেখেই ঋণ নেওয়ার বিষয়টি চিন্তা করতাম। কিন্তু এখন আমরা এটা ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করলাম। আর্থিক সক্ষমতা বাড়ার কারণে এ অবস্থা।”

অনুদানটা ৩৫ শতাংশ থাকলে ঋণ পাওয়ায় কোনো সমস্যা হত কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ঋণ পাওয়ার জন্য কোনো সমস্যা নেই। তবে আমাদের নিজস্ব বিবেচনার জন্য এ কাজটি আমরা করেছি। বিশ্ব ব্যাংক ও অন্যরাও এটা চায়, যেহেতু আমাদের অবস্থা ভালো হয়েছে।”

চট্রগ্রামে নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, বেসরকারি খাতে চট্টগ্রাম বারৈয়ারহাট ১৩২/৩৩ কেভি সা-স্টেশনের কাছাকাছি স্থানে ৫০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের দরপ্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

২০ বছর মেয়াদী এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪১৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কনসোটিয়াম অব আইবি ভোগট জিএমবিএইচ এন্ড এজি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে ২০ বছর মেয়াদে ‘নো ইলেকটিসিটি-নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে ‘এক্সপোর্ট কমপিটিভনেস ফর জবস’ প্রকল্পের একটি প্যাকেজের সেবার জন্য পরামর্শক নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ কোটি ৮১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন (প্রথম পর্যায়) তৃতীয় সংশোধিত প্রকল্প সংশ্লিষ্ট আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মহেশখালী চ্যানেল পাড়ে ও বাঁকখালী নদীর তীরে স্লোপ প্রতিরক্ষাসহ অন্যান্য কাজের ভেরিয়েশনজনিত ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এতে ৮৬ কোটি ৭১ লাখ ৬৫ হাজার টাকার খরচ বাড়িয়ে মোট খরচ ধরা হয়েছে ২৭৮ কোটি ৪১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এর মূল মূল্য ছিল ১৯১ কোটি ৭০ লাখ টাকা।