এখন থেকে সাধারণ ব্যাংকগুলোর ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) হবে ৮৫ শতাংশ; আর ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রে হবে ৯০ শতাংশ।
অর্থাৎ এখন থেকে সাধারণ কোনো ব্যাংক ১০০ টাকা আমানত গ্রহণ করলে ৮৫ টাকা ঋণ বিতরণ করতে পারবে। আর ইসলামী ব্যাংকগুলো ১০০ টাকা আমানত সংগ্রহ করলে ৯০ টাকা ঋণ দিতে পারবে।
এতোদিন সাধারণ কোনো ব্যাংক ১০০ টাকা আমানত গ্রহণ করলে ৮৩ টাকা ৫০ পয়সার বেশি ঋণ বিতরণ করতে পারত না। আর ইসলামী ব্যাংকগুলো ১০০ টাকা আমানত সংগ্রহ করলে ৮৯ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারত।
বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার নতুন এই এডিআর নির্ধারণ করে দিয়ে এক সার্কুলার জারি করেছে।
সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এই সার্কুলারে বলা হয়েছে, সামগ্রিকভাবে ‘ব্যাংকিং খাতের মূলধন ভিত্তি, তারল্য পরিস্থিতি, আন্তঃব্যাংক নির্ভরশীলতা এবং সর্বোপরি ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়নের’ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
“পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত প্রচলিত ধারার ব্যাংকের জন্য অগ্রিম-আমানত হার সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ (৮১.৫ শতাংশ + সার্বিক আর্থিক সূচকসমূহ বিবেচনায় ব্যাংকের পর্ষদের সিদ্ধান্তক্রমে অতিরিক্ত ৩.৫ শতাংশ) এবং ইসলামি শরীয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংক এবং প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রমের জন্য বিনিয়োগ-আমানত হার) সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ (৮৯.০ শতাংশ + সার্বিক আর্থিক সূচকসমূহ বিবেচনায় ব্যাংকের পর্ষদের সিদ্ধান্তক্রমে অতিরিক্ত ১.০ শতাংশ) নির্ধারণ করা হলো।”
২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি ব্যাংকগুলোর এডিআর (ঋণ-আমানত অনুপাত) কমিয়ে সাধারণ ব্যাংকের জন্য ৮৩ টাকা ৫০ শতাংশ এবং ইসলামী ব্যাংকগুলো ৮৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
যে সব ব্যাংক এই সীমার বেশি ঋণ বিতরণ করে করেছিল তাদের সমন্বয় করার জন্য দুই দফা সময় বাড়ানো হয়েছিল। মঙ্গলবার এডিআর সেই আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
“যাই হোক শেষ পর্যন্ত আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে বেরসকারি খাতে ঋণ বাড়বে; শেয়ারবাজারেও কিছু টাকা যাবে। সার্বিকভাবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বেশ কিছুদিন ধরেই বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহে মন্দা চলছে। যার ফলে বিনিয়োগেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ।
অথচ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল প্রায় ১৭ শতাংশ।
বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের নিম্নগতির কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতেও লক্ষ্য কমিয়ে ধরেছে বাংলাদে ব্যাংক।
নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। গত অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতিতে এই লক্ষ্য ছিল ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।