মহাসড়কে ২১ স্থানে বসছে ‘ওজন স্কেল’

দেশের মহাসড়কগুলোর স্থায়িত্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে অতিরিক্ত ভারের যানবাহন চলাচল ঠেকাতে ২১টি স্থানে ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2019, 12:28 PM
Updated : 3 Sept 2019, 12:37 PM

এজন্য ‘সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহণের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প মঙ্গলবার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে একনেকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের এই সভায় এটিসহ মোট ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৬৩০ কোটি টাকা।

সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের দেশে অতিরিক্ত ওজনের যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কগুলো ভেঙে যাচ্ছে। মহাসড়ক তৈরির কিছু দিনের মধ্যে আবার সেই সড়ক সংস্কারের জন্য প্রকল্প নিতে হচ্ছে।”

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে এই প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, দেশে জাতীয় ও জেলাসহ মোট ২১ হাজার ৩০২ কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নকশা নীতিমালা অনুযায়ী সাধারণত দেশের মহাসড়কগুলোর ১০ থেকে ২০ বছরের আয়ুষ্কাল ধরে সড়কের উপরের অংশ নির্মাণ করা হয়। ওই আয়ুষ্কাল পাওয়ার জন্য মহাসড়কগুলোতে সর্বোচ্চ সাড়ে ১৫ টনের ওজনের যানবাহন চলাচলের বাধ্যকতা রয়েছে।

“কিন্তু আমাদের মহাসড়কগুলোতে ৩০ টনেরও বেশি ওজনের যানবাহন চলাচল করছে। ফলে আয়ুষ্কালের অনেকে আগেই সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। অনেক সময় অতিরিক্ত ওজনের ভারী যানবাহনগুলোই সড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।”

মান্নান বলেন, সারা দেশের পণ্য পরিবহণের মোট ২১টি উৎসমুখে এসব এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

এগুলো হচ্ছে- গাজীপুর সদর, কেরানীগঞ্জ, হালুয়াঘাট, নালিতাবাড়ি, বুড়িচং, ফেনী সদর, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম সদর, সীতাকুণ্ড, নবীগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, রামপাল, সাতক্ষীরা সদর, দামুড়হুদা, শিবগঞ্জ, হাকিমপুর, রৌমারী, তেঁতুলিয়া, সৈয়দপুর, শিবচর ও কালিহাতি উপজেলা।

মন্ত্রী জানান, বৈঠকে যে ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তার সমন্বিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৩২৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৫ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা আর সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৯৯৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা জোগান দেওয়া হবে।

অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো

>> ‘কুড়িগ্রাম (দাসেরহাট)-নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারী-সোনাহাট স্থলবন্দর সড়ককে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প। ব্যয় ৬৮৫ কোটি টাকা।

>> ‘ভুয়াপুর-তারাকান্দি জেলা মহাসড়ক (জেড-৪৮০১) যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্প। ব্যয় ৩০৭ কোটি ১২ লাখ টাকা।

>> ‘৪ লেনে উন্নীত ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক (এন-১) (দাউদকান্দি-চট্টগ্রাম অংশ)-এর ৪ (চার) বছরের জন্য পারফরম্যান্স বেইজড অপারেশন ও দৃঢ়করণ’ প্রকল্প। ব্যয় ৭৯৩ কোটি টাকা।

>> ‘পানির গুণগতমান পরীক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্প। ব্যয় ১৭৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

>> ‘নরসিংদী জেলা কারাগার নির্মাণ’ প্রকল্প। ব্যয় ৩২৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

>> ‘মানসম্পন্ন বীজ আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ’ প্রকল্প। ব্যয় ৬৮৮ কোটি ২১ লাখ টাকা।

>> ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে কাব স্কাউটিং সম্প্রসারণ প্রকল্প (৪র্থ পর্যায়)’ প্রকল্প। ব্যয় ৩৫৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

>> ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প। ব্যয় ৪৫১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

>> ‘কনভারশন অব ১৫০ মেগাওয়াট সিলেট গ্যাস টারবাইন পাওয়ার প্ল্যান্ট টু ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প। ব্যয় ৯১০ কোটি ৬ লাখ টাকা।