স্ব-শাসিত সংস্থার উদ্বৃত্ত অর্থ যাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে

স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইনানশিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাগুলোর উদ্বৃত্ত অর্থ রাষ্ট্রের উন্নয়নমূলক কাজে লাগাতে একটি আইন করছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2019, 10:02 AM
Updated : 2 Sept 2019, 11:22 AM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমাবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনের খসড়া অনুমোদন পায়।

পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এক ব্রিফিংয়ে বলেন, রাষ্ট্রের স্বশাসিত সংস্থাগুলোর আর্থিক স্থিতির পরিমাণ বর্তমানে দুই লাখ ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এই টাকা বিভিন্ন ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট হিসাবে আছে।

“এই টাকাগুলো কোনো ভালো কাজে ইনভেস্ট হচ্ছে না। এজন্য সরকারের পলিসি হল, নতুন আইনের মাধ্যমে কিছু প্রভিশন রেখে বাকি টাকাটা সরকারি কোষাগারে নিয়ে আসা। আমাদের অনেক প্রজেক্ট আছে, জনকল্যাণমূলক কাজ, যেগুলো আর্থিক সংকটের কারণে ফাইন্যান্স করা যায় না, সেটাকে….। “

এ আইনের নাম হবে ‘স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইনানশিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান আইন, ২০১৯।’

খসড়ায় বলা হয়েছে, এসব সংস্থা চালাতে যে খরচ হয় এবং নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বছরে যে অর্থ লাগে, তা তাদের নিজস্ব তহবিলে জমা রাখা হবে।

তাছাড়া আপৎকালীন ব্যয় নির্বাহের জন্য পরিচলন ব্যয়ের আরও ২৫ শতাংশ অর্থ এসব সংস্থা সংরক্ষণ করতে পারবে। ওই সংস্থার কর্মীদের পেনশন বা প্রভিডেন্ড ফান্ডের অর্থও তারা সংরক্ষণ করবে।

“এরপর যে অর্থ বাকি থাকবে, সেটা সরকারের কোষাগারে জমা দেবে। অর্থ্যাৎ উনাদের বিপদে ফেলা হবে না, উনাদের প্রয়োজনীয় অর্থ রেখে বাকি অর্থটা দেবে,” বলেন সচিব। 

এ ব্যবস্থা হলে প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বায়ত্তশাসনে ‘কোনো সমস্যা হবে না’ মন্তব্য করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আর্থিক ডিসিপ্লিনেও কোনো সমস্যা হবে না। এটা হচ্ছে উনাদের যে আইডল মানি আছে, তা সরকারের ইনভেস্টমেন্টে কাজে লাগানো। আইনি অধিকারও ক্ষুণ্ন করা হয়নি, উনাদের যে টাকার প্রয়োজন হয়, তা তো সরকার দিচ্ছে।”

তিনি বলেন, পরিচালন ব্যয় হিসেবে কোন সংস্থা কত টাকা রাখবে, তা তারা নিজেরাই নির্ধারণ করবে।

২৫টি বড় প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক তথ্য সরকারের কাছে রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এর মধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের ২১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা (মে ২০১৯ এর তথ্য), পেট্রোবাংলার ১৮ হাজার ২০৪ কোটি টাকা, পিডিবির ১৩ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম বন্দরের ৯ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা, রাজউকের ৪ হাজার ৩০ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত আছে।

বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড বাদ দিলে এরকম ৬৮টি প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা ইতোমধ্যে করা হয়েছে বলে তথ্য দেন শফিউল আলম।

এর মধ্যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “এখানে বোর্ডগুলো আছে। যেমন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। উনাদের অনেক আইডল মানি আছে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড রয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে।”

শফিউল আলমের ভাষায়, আকারে ছোট হলেও ধরনের দিক দিয়ে এ আইন হবে ‘সুপারসিডিং’। অর্থাৎ, অন্যান্য করপোরেশনের আইনের যাই বলা থাকুক না কেন, তার ওপরও এ আইনের বিধান কার্যকর হবে।