‘দুষ্টু’ ঠিকাদারদের কালো তালিকায় চান পরিকল্পনামন্ত্রী

‘দুষ্টু’ ঠিকাদারদের কালো তালিকাভুক্ত করা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2019, 04:32 PM
Updated : 22 August 2019, 04:32 PM

বৃহস্পতিবার ঢাকার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে পাবলিক প্রাইভেট স্টেকহোল্ডার কমিটির ১৩তম বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “দুষ্টু ঠিকাদারদের কালো তালিকাভূক্ত করা উচিত বলে আমি মনে করি।”

এইসব ঠিকাদারদের চিহ্নিত করে তাদের কাজ পাওয়া বন্ধ করার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “এলজিইডি জানে না কারা দুষ্টু কন্ট্রাক্টর? রোডস ডিভিশন জানেন না?  পিডিবি জানেন না? ওয়াটার বোর্ড জানেন না?

”অবশ্যই জানেন… যেসব খাতে দুষ্টু ঠিকাদার আছেন তাদেরকে ব্ল্যাক লিস্ট করে আন্তঃমন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রকাশ করে দিন, যাতে অন্য কোনো খাতে গিয়ে ওই কন্ট্রাক্টর কাজ না পায়।”

মান্নান বলেন, “বিদেশি সংস্থাগুলো যখন কারও চাকরি খায়, তখন অন্যান্য সংস্থাকেও জানিয়ে দেয়। যাতে সে অন্যান্য জায়গায়ও কাজ করতে না পারে।”

তবে আইনে চূড়ান্ত দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যযন্ত ওই ঠিকাদারকে কাজ করে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।

সকল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি বৈঠক আয়োজন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পাশাপাশি সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট ইউনিটকে (সিপিটিইউ) একটি পরিপত্র জারি করার পরামর্শ দেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমাদের উন্নয়নের দুটি বাধা আছে। একটি বাধা কন্ট্রাক্টর সাহেবরা, আরেকটি বাধা আমি বলব না।

“আমি বুঝতে পারি না, কন্ট্রাক্টররা কাজ নিয়ে বসে থাকে। কাজ শুরু করে না, সময় কাটায়, আসে না, যায় না। কেন করে না, আমি বুঝি না।”

ছোট ছোট ঠিকাদারদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পে সিসিটিভি বসানোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, মেগা প্রকল্পগুলোতে কী কী ব্যবহার হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণের জন্য সিসিটিভি স্থাপন করা উচিৎ।

অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) গবেষণা পরিচালক ড. মির্জা হাসান মূল প্রবন্ধে বলেন, “স্থানীয় জনগণকে সংশ্লিষ্ট করে গ্রামীণ এলাকায় সরকারের উন্নয়ন কাজ যথাযথ মান নিশ্চিত করার জন্য কাজ চলছে।

“ইতোমধ্যেই এই প্রক্রিয়ায় রাজশাহীর ধুনটে একটি গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট স্থানীয় জনগণ ফিরিয়ে দিয়েছে। একইভাবে খুলনার কেশবপুরেও দুই ট্রাক নিম্ন মানের ইট ফিরিয়ে দিয়েছে স্থানীয় জনগণ।”

তিনি বলেন, “একইভাবে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় একটি রাস্তা নির্মাণে ঠিকাদার দুই ইঞ্চি কার্পেটিং করতে চাইলে স্থানীয় জনগণের প্রতিবাদের মুখে পড়ে তিন ইঞ্চি করতে বাধ্য হয়। এভাবে দেশের আরও অনেক জায়গায় স্থানীয় জনগণের প্রতিবাদ ও সচেতনতায় ঠিকাদার বাধ্য হয়ে সঠিক কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে।”

মির্জা হাসান আরও বলেন,  “পাবলিক প্রাইভেট স্টেক হোল্ডার কমিটির মাধ্যমে স্থানীয় জনগণকে সরকারি কাজ পর্যযবেক্ষণে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

“যেসব জায়গায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে সেসব জায়গায় সরকারি কাজের মান বাড়াতে সংশ্লিষ্ট জনগণ পর্যযবেক্ষণ করছে।”

বৈঠকে আইএমইডি সচিব আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহ এবং সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট ইউনিট (সিপিটিইউ) মহা পরিচালক মো. আলী নুর উপস্থিত ছিলেন।