জ্বালানি কর্মকর্তাদের ‘বিদেশ ভ্রমণে’ সমালোচনামুখর প্রতিমন্ত্রী-সচিব

সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণের জন্য জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ কোনো কাজে লাগে না মন্তব্য করে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের উপর জোর দিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2019, 04:14 PM
Updated : 9 August 2019, 04:22 PM

আর জ্বালানি বিভাগের সচিব আবু হেনা রহমাতুল মুনিম বলেছেন, সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণের নামে কর্মকর্তারা কেবল বিদেশ ভ্রমণ করেন।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পেট্রোবাংলা কার্যালয়ে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তারা কর্মকর্তাদের ‘নামেমাত্র’ প্রশিক্ষণের সমালোচনা করেন।

নসরুল হামিদ বলেন, “আমি প্রতিদিন যে ফাইলগুলো স্বাক্ষর করি, তার ৬০ শতাংশই বিদেশ ভ্রমণের। আমি যখন দেখি, ৭ থেকে ১০ দিনের ট্রেনিং, তখন ধরেই নেই কোনো কাজে আসবে না। তিন মাস, ছয় মাস মেয়াদের ট্রেনিংয়ের মডেল করতে হবে, যাতে দক্ষ জনবল তৈরি করা সম্ভব হয়।”

পরে জ্বালানি বিভাগের সচিব বলেন, “ট্রেনিং মানে বিদেশ ভ্রমণ, ঘোরাফেরা হয়ে গেছে। এধরনের বিদেশ সফর কোনো ফল দেবে না। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে ট্রেইনার আনা হবে। “

সেমিনারে বিদ্যুৎ বিভাগের মতো করে ভবিষ্যত প্রকল্পগুলোর জন্য জ্বালানি বিভাগের যোগ্য জনবল সৃষ্টিতে প্রশিক্ষণের আয়োজনের উপর জোর দেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বিদ্যুৎ বিভাগ বছরে দুই হাজার ৫০০ জনবলের ট্রেনিং দিচ্ছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য কী ধরনের কর্মকর্তা দরকার তার প্রশিক্ষণ এখনই শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের মতো জ্বালানি বিভাগেও বড় বড় প্রকল্প আসছে। সেজন্য এখনই পরিকল্পিত ও কার্যকর প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ লোক তৈরি করতে হবে।

“ডিপ সি পাইপ লাইন আসছে। এগুলো কীভাবে পরিচালনা করবেন। ইস্টার্ন রিফাইনারি আসবে চতুর্থ ধাপের প্রযুক্তি নিয়ে। এসব পরিচালনা করার জন্য আপনাদের প্রস্তুতি হচ্ছে কিনা?”

১৯৭৫ সালে ৯ আগস্ট জরুরি এক সিদ্ধান্তে ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র (তিতাস, বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, রশিদপুর ও কৈলাশটিলা) ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড মূ্ল্যে কিনে নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে তার এমন সিদ্ধান্ত দেশে জ্বালানি চাহিদা পূরণে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচিত। এই ঘটনার স্মরণেই প্রতিবছর পালিত হয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস।

বাংলাদেশের বর্তমানন অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভিত্তি বঙ্গবন্ধুর চার বছরের শাসনামলেই তৈরি হয়েছিল মন্তব্য করে নসরুল বলেন, “আজকে যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন, আমরা বহু আগে উন্নত অর্থনীতির দেশে উন্নীত হতে পারতাম। পঁচাত্তরের পর এই দেশ ধ্বংস হয়েছে কেবল নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে।

“গত ৩০ বছরে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে আমাদের দেশকে আমরা একটা দুরাবস্থার মধ্যে নিয়ে গিয়েছিলাম। বিদ্যুতের সিস্টেম লস ছিল ৪৭ শতাংশ, গ্যাসের সিস্টেম লস ছিল ৩০ শতাংশের বেশি।” 

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার, বিপিসির চেয়ারম্যান সামছুর রহমান, পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক শাহনেওয়াজ পারভেজ সেখানে বক্তব্য দেন।