খুলনা-বরিশাল অঞ্চলে গ্যাস পাইপলাইন নেওয়ার চিন্তা

দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সে অঞ্চলে গ্যাস পাইপলাইন নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2019, 01:03 PM
Updated : 8 August 2019, 01:03 PM

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।

ভোলায় আরও গ্যাস পাওয়ার ‘বড় সম্ভাবনা’ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “গ্যাসলাইন নির্মাণ করে কীভাবে তা পটুয়াখালী পর্যন্ত নিয়ে আসতে পারি, সেটারও সম্ভাবনাও যাচাই-বাছাই চলছে।

“আমরা মধ্যাঞ্চলে যেভাবে গ্যাস বিতরণ করেছি, আমরা চিন্তা করেছি দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে কীভাবে গ্যাস দেওয়া যায়। অর্থাৎ খুলনা ও যশোর- এই এলাকায়। এছাড়া উত্তরের দিকেও কীভাবে গ্যাস নেওয়া যায়।”

বাংলাদেশের মধ্য এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ হলেও উত্তরাঞ্চলে কিছু জেলাই কেবল গ্যাস পাচ্ছে পাইপলাইনে।

গ্যাস এখন গৃহস্থালিতে ব্যবহার না করে শিল্পোৎপাদনেই ব্যবহারের পক্ষপাতি সরকার। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস গেলেও তা যে শিল্পোৎপাদনের জন্যই যাবে, তা স্পষ্ট।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “পদ্মা সেতু হলে বিরাট সম্ভবনা তৈরি হবে। খুলনায় ইকোনমিক জোন হচ্ছে। খুলনা, যশোর, বরিশাল, পটুয়াখালী এই অঞ্চলে কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। সেখানে জ্বালানি নিরাপত্তা তৈরি করতে হবে।”

নিরবচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ী করতে ঢাকা শহরের পুরনো গ্যাস লাইনগুলোকে নতুন করে স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়নের কথাও বলেন তিনি।

ভারত থেকে গ্যাস আনা লাভজনক হবে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে বলেও জানান নসরুল।

তিনি বলেন, “আমরা ভারত থেকে বিদ্যুৎ নিচ্ছি, গ্যাসের সম্ভাবনা দেখছি ভারত থেকে নেওয়ার জন্য। আমরা জ্বালানিকে সিকিউরড করার জন্য নিচ্ছি। আমরা যাতে পিছিয়ে না থাকি।”

জ্বালানি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে পরিবেশের দিকটি বিবেচনায় রেখে পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে বলে দাবি করেন নসরুল।

“প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পরিবেশকে সাথে রেখে সবকিছু করতে হবে। সুতরাং আমাদের কোনো নতুন টেকনোলজি থাকে, সেটা যদি পরিবেশকে সাথে নিয়ে কাজ করা যায়, তাহলেই কেবল আমরা কয়লা উত্তোলনে যাব।”

দেশের কয়লা খনিতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের বিরোধিতা করছে পরিবেশবাদীরা। ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন আবার লাভজনক না হওয়ায় তা নিয়ে এগোচ্ছে না সরকার।

নসরুল বলেন, জ্বালানি কার্যকরভাবে ব্যবহারের উপর সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে সরকার।

“যে গ্যাসে যানবাহন চলে, আমরা দেখেছি সেটার এফিশিয়েন্সি মাত্র ১৭ থেকে ২১ শতাংশ। সেই গ্যাস দিয়ে যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন করি, সেই বিদ্যুৎ দিয়ে যদি যানবাহন চালাই, সেটার এফিশিয়েন্সি ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ। আমরা চেষ্টা করছি, বিদ্যুৎচালিত যানবাহনগুলোকে আরও সহজতর করা যায় কি না?”

বিভিন্ন সংস্থার কাছে জ্বালানি বিভাগ যে ৫ হাজার কোটি পাবে, তা আদায় চলছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়কর বিবরণী কবে নাগাদ প্রকাশ করা হবে- জানতে চাইলে নসরুল বলেন, এটা প্রকাশ করা হবে না।

“তিতাসের আয়কর বিবরণী আমরা চেয়েছি নিজেদের যাচাই-বাছাইয়ের জন্য। আমরা এটা প্রকাশ করতে পারব না, কারণ এটা তাদের ব্যক্তিগত তথ্য।”

বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোকে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি কল সেন্টার করার জন্য বলা হয়েছে বলে জানান জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।