প্রণোদনা পেতে ১৫০০ ডলার পর্যন্ত কাগজপত্র লাগবে না

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে প্রণোদনা পেতে ১ হাজার ৫০০ ডলার পর্যন্ত কোন ধরনের কাগজপত্র লাগবে না।

আবদুর রহিম হারমাছিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 August 2019, 04:22 PM
Updated : 6 August 2019, 04:22 PM

তবে রেমিটেন্সের পরিমাণ এই অংকের বেশি হলে প্রাপককে প্রেরকের পাসপোর্টের কপি এবং বিদেশী নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপত্র অবশ্যই জমা দিতে হবে।

আর ব্যবসায়ী ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবসার লাইসেন্সের কপি দাখিল করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক  মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত যে নীতিমালা ঘোষণা করেছে তাতে এ সব দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে প্রবাসীরা ১০০ টাকা দেশে পাঠালে ২ টাকা প্রণাদনা পাবেন।

বাজেটে এ জন্য ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত রেমিটেন্সে এ ধরনের প্রণাদনা দেওয়া হচ্ছে।

গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এক হাজার ৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ (১৬.৪২ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

ফাইল ছবি

নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৬০ কোটি ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আর গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে ২১ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বেশি অর্থ দেশে পাঠানোয় অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই সূচক বেড়েছে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা।

রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে প্রবাসীরা দেশে বেশি অর্থ পাঠানোয় চলতি বছরের মে মাসে ১৭৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার রেমিটেন্সে আসে; যা ছিল মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

তার আগে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, ১৫৯ কোটি ৭২ লাখ ডলার

‘বৈধ উপায়ে রেমিটেন্স প্রেরণের বিপরীতে প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রদানের নীতিমালা’ শীর্ষক নীতিমালায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের গুরুত্ব বিবেচনায় দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমজীবী মানুয়ের কষ্টার্জিত বৈদেশিক আয় বৈধ উপায়ে দেশে পাঠাতে উৎসাহিতে করতে রেমিটেন্সের বিপরীতে সরকার প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ সুবিধা ওয়েজ আর্নার্স রেমিটেন্সের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।

সহায়তা পেতে যে সব পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে:

>> বিদেশ হতে প্রেরিত প্রবাসী বাংলাদেশীদের রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক প্রযোজ্য বিনিময়হারে টাকায় রূপান্তরিত অর্থ প্রচলিত বিধিবিধান পরিপালন করে উপকারভোগীর হিসাবে জমা/ উপকারভোগীকে প্রদানের সময় উক্ত অর্থের উপর ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদান করবে।

>> বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় পরিচালিত বিদেশী এক্সচেঞ্জ হাউজ/ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতে হবে।

>> একজন প্রবাসীর রেমিটেন্সের উপর প্রতিবারে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ ডলার/সমমূল্যের অর্থের জন্য কোন প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই প্রণোদনা সুবিধা পাওয়া যাবে।

>> ১৫০০ ডলারের  বেশী লেনদেনে প্রাপককে রেমিটেন্স প্রেরকের বৈধ কাগজপত্র (যেমন-পাসপোর্টের কপি এবং বিদেশী নিয়োগদাতা কর্তৃক প্রদত্ত নিয়োগপত্রের কপি/ বিএমইটি প্রদত্ত সনদপত্রের কপি, ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবসার লাইসেন্সের কপি ইত্যাদি) রেমিটেন্স প্রদানকারী ব্যাংক শাখায় দাখিল সাপেক্ষে নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে।

>> বিধিবহির্ভূতভাবে নগদ সহায়তা গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেলে পরবর্তীতে সে/তাঁরা এ সুবিধা প্রাপ্য হবে না এবং প্রদত্ত অর্থ তার কাছ থেকে আদায় করা হবে।

>> বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের প্রবাসী আয় আহরণের গড় মাসিক অংকের ভিত্তিতে তিন মাসের জন্য প্রয়োজনীয় নগদ সহায়তার অনুমিত পরিমাণের তহবিল সরকারি বরাদ্দ হতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইমপ্রেস্ট আগাম আকারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অনুকূলে হস্তান্তর করবে।

নগদ সহায়তার অর্থ বিতরণ প্রক্রিয়া:

>> রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক নগদ সহায়তা প্রদানের জন্য একটি পৃথক টাকা হিসাব পরিচালনা করবে।

>> প্রাপকের হিসাব রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক ভিন্ন অন্য কোন ব্যাংকে হলে রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক ২ শতাংশ নগদ সহায়তাসহ বিইএফটিএন, আরটিজিএস, এনপিএসবি বা এমএফএস এর মাধ্যমে তাঁর (প্রাপকের) হিসাবে জমা করবে।

>> বেনিফিশিয়ারির মোবাইল ফোনে তার অনুকূলে রেমিটেন্সের টাকা জমা হওয়ার মেসেজ/লেনদেনের রশিদ প্রদান করবে। উক্ত মেসেজে/লেনদেনের রশিদে সরকার প্রদত্ত নগদ সহায়তার পরিমাণ পৃথকভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

>> শর্ত মোতাবেক প্রাপক রেমিটেন্স গ্রহণের দিন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল না করলে পরবর্তী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তা উপস্থাপন করলে রেমিটেন্স প্রদানকারী ব্যাংক তাকে প্রাপ্য নগদ সহায়তা প্রদান করবে।

>> এই প্রণোদনা ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।