সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনাই এখন চ্যালেঞ্জ: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে বর্তমান সময়ের অন্যতম ‘বড় চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে বর্ণনা করে এ বিষয়ে এশিয়ার দেশগুলোর একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2019, 05:00 PM
Updated : 24 July 2019, 05:00 PM

তিনি বলেছেন, “এখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের একটি হচ্ছে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা। পৃথিবীর অনেক দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে।”

‍বুধবার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) আয়োজিত দুদিনব্যাপী ‘গুড প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন ফোরাম’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রথমবারের মত আয়োজিত এ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, ভারত, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ এবং শ্রীলংকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে জড়িত প্রায় ৩০০ কর্মকর্তা অংশ নিচ্ছেন।

তাদের উদ্দেশে তাজুল ইসলাম বলে, “এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য একটি মাস্টার প্ল্যানের দরকার আছে। এতে আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই।”

উন্নয়নের পথে বাংলাদেশের এগিয়ে চলার চিত্র তুলে ধরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ যখন প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসে, বাংলাদেশ তখন দারিদ্র্যের সঙ্গে যু্দ্ধ করছিল।

“তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমেই দারিদ্র্য কীভাবে দূর করা যায় সে কর্মসূচি গ্রহণ করলেন। আমরা কোনো ধর্মের ভিত্তিতে উন্নয়ন চিন্তা করিনি। বরং সকল মানুষ এবং মানব জাতির উন্নয়নের চিন্তা করেছি।”

সেই সময়ে সরকারের উন্নয়ন ভাবনার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “শুরুতেই আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক ও স্থিতিশীল পরিস্থিতি বজায় রাখার কৌশল নিয়ে এগোয়। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিষয়টি সমাধান করে নিই।

“এরপর আমরা ভারতের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল বিনিময় করে অমীমাংসিত সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে আরও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিশ্চিত করি। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই আমরা দারিদ্র্য বিমোচন ও দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিই।”

এভাবে দারিদ্র্যের হার নামিয়ে আনতে সাফল্য পাওয়ার কথা তুলে ধরে তাজুল ইসলাম বলেন, “আপনি কীভাবে উন্নয়ন করতে চান তার একটি নকশা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করতে পারলে সে উন্নয়ন সবচেয়ে বেশি কার্য়কর ফল দেয় বলে আমি মনে করি।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে গ্রামকে শহরে উন্নীত করার যে অঙ্গীকার করেছেন, সে কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বরেন, “আমরা গ্রামীণ মানুষের কাছে শহরের সেবা পৌঁছে দিয়ে তাদের জীবন মান উন্নয়নের কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। তাদের জন্য সুপেয় পানি, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষার উন্নত পরিবেশ, ইউনিয়ন থেকে উপজেলার সঙ্গে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।”

এসব নিশ্চিত করতে পারলেই গ্রামকে শহরে উন্নীত করার কাছাকাছি পৌঁছানো যাবে বলে মনে করছেন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “গ্রামেই আমরা কৃষি, শিক্ষা, যোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ (আইসিটি) সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দিতে চাই।”

এডিবির আবাসিক প্রতিনিধি মনমোহন পারকাশ অনুষ্ঠানে বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, বাস্তবায়ন এবং পরিবীক্ষণ দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এ সম্মেলনের মাধ্যমে এক দেশ অন্য দেশের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারবে।

বাংলাদেশকে এশিয়ার অন্যতম উদীয়মান অর্থনীতি হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধি যেখানে ৫ শতাংশের একটু বেশি, সেখানে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের ওপরে।

“এখনো বাংলাদেশের প্রধান অর্থনৈতিক খাত কৃষি। সম্প্রতি ব্যাপকভাবে বেসরকারি বিনিয়োগ শুরু হয়েছে। দিন দিন বাড়ছে উন্নয়ন বাজেট। দাতাদের কাছ থেকেও সহযোগিতা বাড়ছে। ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্য়ন্ত মাত্র চার বছরেই এডিবির পক্ষ থেকে পাচ্ছে ৮ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি।”

সাধারণ মানুষের ভ্রমণ ও যোগাযোগ ‘আরামদায়ক’ করতে এডিবি রেলের উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে আসছে বলেও মনমোন পারকাশ জানান।