ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুযোগ কেন বেআইনি নয়: হাই কোর্ট

ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2019, 11:34 AM
Updated : 23 July 2019, 11:34 AM

সার্কুলারটি কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে নতুন এই রুল হয়েছে।

এই সংক্রান্ত জারি করা রুল নিষ্পত্তি করতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চে মঙ্গলবার শুনানির জন্য উঠলে রিট আবেদনকারী পক্ষের সম্পূরক আবেদনে এই আদেশ দেয় আদালত।  

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। বাংলাদেশের ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন মুনিরুজ্জামান। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন মনজিল মোরসেদ। ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-বিএবি’র পক্ষে ছিলেন শাহ মঞ্জুরুল হক।

এ বছরের শুরুতে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর আ হ ম মুস্তফা কামাল ঘোষণা দিয়েছিলেন, খেলাপি ঋণ আর ‘এক টাকাও বাড়বে না’।

এরপর ঋণ অবলোপনের নীতিমালা শিথিলসহ কিছু পদক্ষেপ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক, ফাইল ছবি

২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে ১০ বছরে খেলাপি ঋণ পরিশোধের সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশ যে সার্কুলার দিয়েছিল, তা চ্যালেঞ্জ করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ।

তাদের আবেদনে ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলারের উপর ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা জারি করেছিল বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ।

এরপর অর্থ বিভাগের আবেদনে গত ৮ জুলাই আপিল বিভাগ ওই সার্কুলারের উপর হাই কোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশ শর্তসাপেক্ষে দুই মাসের জন্য স্থগিত করে।

সেই সঙ্গে হাই কোর্ট আগে যে রুল জারি করেছিল, তা নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চকে দায়িত্ব দেয় আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার এই বেঞ্চে শুনানির পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেই (পুরনো) রুলটি শুনানির এক পর্যায়ে একটি সম্পূরক রুলের জন্য আরেকটি আবেদন করেছিলাম। আজকে সেটার উপরও শুনানি হয়েছে।

ফাইল ছবি

“শুনানিতে বিবাদী পক্ষের আপত্তির পরও ‘ণ খেলাপিদের বিশেষ সুযোগ দিয়ে গত ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলার কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, মর্মে রুল জারি করেছেন।”

আগামী ৩১ জুলাই পরবর্তী শুনানির তারিখ রাখা হয়েছে বলে জানান মনজিল।

তিনি বলেন, “এই সার্কুলারটা জারি করা হয়েছিল ব্যাংকিং কমিশন গঠন বিষয়ে আদালতের রুল জারির পর এবং এই সার্কুলারটি ব্যাংকিং কমিশনের সাথে সম্পর্কিত। এই কারণে এটিতে রুল ইস্যু হওয়ার যোগ্য। তাই আদালত ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।”

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানিতে বলেছিলেন, সার্কুলারটি সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয়ক। তাই এই রিট আবেদন ‘মেইনটেনেবল’ না।

“তখন আদালত রুল শুনানির সময় এ বিষয়ে শুনানি করতে বলেছেন,” বলেন মনজিল মোরসেদ।