অতীত টেনে জরাজীর্ণ করবেন না: বেসিকের বাচ্চুকে নিয়ে অর্থমন্ত্রী

বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর ঋণ কেলেংকারিসহ অর্থমন্ত্রী হওয়ার আগের আর্থিক অনিয়মের দায় থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চান আ হ ম মুস্তফা কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2019, 01:50 PM
Updated : 18 July 2019, 01:50 PM

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপের সময় বাচ্চুর প্রসঙ্গ উঠলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “অনেক অনেক পুরনো হিসাব নিয়ে আসলে আমি পারবো না। অতীতেরগুলো টেনে এনে আমাকে জরাজীর্ণ করবেন না, বর্তমানগুলোর দায়িত্ব আমার।”

দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত এ ব্যাংকটির চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয় জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আবদুল হাই বাচ্চুকে। সেসময় অর্থমন্ত্রী ছিলেন সদ্য সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বাচ্চু চেয়ারম্যান থাকার সময় ২০১২ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটির দিলকুশা, গুলশান ও শান্তিনগর শাখা থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়াসহ নানা অভিযোগ ওঠে তখনকার পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে।

২০১০ সাল থেকে এবিষয়ে দু্র্নীতি দমন কমিশনের শুরুর পর ২০১৫ সালে রাজধানীর তিনটি থানায় ১৫৬ জনকে আসামি করে ৫৬টি মামলা করে কমিশন। সেসব মামলার আসামির তালিকায় ২৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তা থাকলেও বাচ্চু বা পরিচালনা পর্ষদের কাউকে সেখানে না রাখায় প্রশ্ন ওঠে সে সময়।

এরপর বিভিন্ন মহলের সমালোচনা এবং উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে বাচ্চুকে পাঁচ দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেও দুদক তাকে মামলার আসামি করেনি।

এর মধ্যেই বংশাল থানায় সাত কোটি ৮৫ লাখ ৩২ হাজার ৯৮৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়। ২০১০ সালের ২৯ মার্চ থেকে ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবরের মধ্যে অর্থ আত্মসাতের এসব ঘটনা ঘটলেও সেখানেও বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি।

‘ছোট লাভ’ করে পুঁজিবাজার ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রবণতার সমালোচনা করে মুস্তফা কামাল বলেন, “এখানে আনফরচুনেটলি ক্যাপিটাল গেইনের কথা কেউ চিন্তাই করে না। আমার ১০০ টাকার শেয়ার কয় দিন পর ১৫০ টাকা হবে- এই যে ক্যাপিটাল গেইন হল এটা নিয়ে কেউ চিন্তা করে  না।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, “পুঁজিবাজারের জন্য সরকারের যা করা দরকার, একটা শক্তিশালী অর্থনীতি আমরা দিয়েছি।সারা বিশ্ব বলে, অর্থনীতি এখন শক্তিশালী। এখন তাহলে পুঁজিবাজরে কেন প্রভাব ফেলবে না, প্রভাব আসা উচিত।”

টেরাকোটা রপ্তানির টাকা পাচারের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। যেই করুক তিনি যতিই শক্তিশালী হক, আমার পরিবারের সদস্য হলেও শাস্তির আওতায় আসতে হবে।”

একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঝিনাইদহের এসবি এক্সিম আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে মাটির তৈরি টেরাকোটা টাইলস রপ্তানি করেছে। সেই রপ্তানির বিপরীতে ২০০ কোটি টাকা দেশে আসছে না। কিন্তু ওই রপ্তানি বিল কিনে প্রতিষ্ঠানটিকে ১৯০ কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।