সার সংরক্ষণের সক্ষমতা বাড়াতে ৩১১ কোটি টাকার প্রকল্প

সারের গুদাম রক্ষণাবেক্ষণ, পুনর্বাসন এবং নতুন গুদাম নির্মাণের মাধ্যমে সার ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছেন সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2019, 04:26 PM
Updated : 9 July 2019, 04:26 PM

এজন্য ৩১১ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘বিএডিসির বিদ্যমান সার গুদামসমুহের রক্ষণাবেক্ষণ, পুনর্বাসন এবং নতুন গুদাম নির্মাণের মাধ্যমে সার ব্যবস্থাপনা কার্য়ক্রম জোরদারকরণ (২য় পর্যায়)’ শীর্ষক এ প্রকল্প অনুমোদন পায়।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক হয়।

বৈঠক পরবর্তী ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, দেশের ৫৯ জেলার ১২৮ উপজেলা ও ৮ সিটি করপোরেশন এলাকায় ২০২৪ সালের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

“প্রকল্পটির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে- সার ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষির সামগ্রিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করা। গুদাম নির্মাণের মাধ্যমে বিএডিসির সার ব্যবস্থাপনা বিভাগের নন-নাইট্রোজেনাস সার সংরক্ষণ ক্ষমতা বর্তমান পর্যায়ের চেয়ে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে সার ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোরদার করা।”

এছাড়া সুষ্ঠুভাবে ও সময়মত প্রান্তিক কৃষকের দোরগোড়ায় সার সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং গুদাম, অফিস রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহের মাধ্যমে সার ব্যবস্থাপনা বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধি করাও এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য বলে জানান মন্ত্রী।

প্রকল্পটির মাধ্যমে ৪২টি প্রি ফেব্রিকেটেড স্টিল গুদাম নির্মাণ করা হবে। তাতে সার সংরক্ষণ ক্ষমতা ১ লাখ টন বাড়বে। পাশাপাশি বিদ্যমান ১৩২টি সার গুদাম এবং ১১০টি অফিস মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।

এম এ মান্নান বলেন, গত ১১ বছরে সরকার সার ব্যবস্থাপনায় ‘বিশাল সফলতা’ অর্জন করেছে, যার ফলে দেশে খাদ্য উৎপাদনে সফলতা আসছে।

“আমরা মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানির মত এই খাতেও মনোপোলি ভেঙে দিয়েছি। দেশের প্রয়োজনীয় সকল এলাকায় আমরা সারের ডিলার নিয়োগ দিয়েছি। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রত্যেক কৃষকের কাছে সার পৌঁছে দিয়েছি। অথচ একসময় এই সারের জন্য মানুষের প্রাণ দিতে হয়েছে।”

মন্ত্রী জানান, বৈঠকে এ প্রকল্পটিসহ মোট ৭ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকার ১৩টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৬ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা, প্রকল্প সহায়তা থেকে ১ হাজার ১৪০ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৮৯ কোটি টাকা যোগান দেওয়া হবে।

অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হল-

>> বগুড়া (জাহাঙ্গীরাবাদ)-নাটোর জাতীয় মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প; ব্যয় ৭০৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

>> ঢাকা (মিরপুর)-উথুলী-পাটুরিয়া জাতীয় মহাসড়কের নবীনগর থেকে নয়ারহাট ও পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত এলাকা প্রশস্তকরণ, আমিনবাজার থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ডেডিকেটেড লেইনসহ সার্ভিস লেইন ও বাস-বে নির্মাণ প্রকল্প; ব্যয় ৬৯৬ কোটি টাকা।

>> লাকসাম (বিনয় ঘর) - বাইয়ারা বাজার – ওমরগঞ্জ - নাঙ্গলকোট জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প; ব্যয় ৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

>> মডার্নাইজেশন অব সিটি স্ট্রিট লাইট সিস্টেম অ্যাট ডিফারেন্ট এরিয়া আন্ডার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রকল্প; ব্যয় ২৬০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

>> বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অধীন জরাজীর্ণ ডাকঘরগুলোর সংস্কার/পুনর্বাসন প্রকল্প; ব্যয় ২২৫ কোটি টাকা।

>> শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ৯৮৮ কোটি টাকা।

>> কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আধুনিকায়ন এবং ১৩টি জেলা কার্যালয় স্থাপন প্রকল্প; ব্যয় ৩১১ কোটি টাকা।

>> নদী তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলা সদর সংরক্ষণ প্রকল্প; ব্যয় ৬০৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

>> কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ (দ্বিতীয় পর্য়ায়) প্রকল্প; ব্যয় ১২৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

>> ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নয়টি সেতু নির্মাণ প্রকল্প; ব্যয় ১২০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

>> সিলেট বিভাগের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ২ হাজার ৫২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

>> চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ১ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা।