গ্যাসের দাম বাড়ানোর ‘ইতিবাচক’ দিক দেখালেন রাজ্জাক

গ্যাসের দাম বাড়ায় মানুষ সাময়িক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পরোক্ষভাবে লাভবান হবে বলে দাবি করেছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 July 2019, 02:01 PM
Updated : 7 July 2019, 02:01 PM

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বাম দলগুলোর হরতালের দিন রোববার সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে এই দাবি করেন কৃষিমন্ত্রী।

জ্বালানি মন্ত্রীকে প্রশ্নটি করেছিলেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার।

উত্তরে কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক বলেন, “গ্যাসের দাম বেশ কয়েকবার বেড়েছে এবং প্রতিক্রিয়াও হয়েছে যে দাম বাড়ানো ঠিক হয়নি। স্বীকার করি, দাম বাড়ানো হলে সাধারণ মানুষ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”

সেইসঙ্গে গ্যাসে ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “এক্ষেত্রে চিন্তা করতে হবে, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে গিয়ে কিছুটা দাম বাড়লেও এর নানামুখী প্রভাব, অর্থাৎ শিল্প কারখানা স্থাপনসহ সার্বিক অর্থনীতির উপর কী প্রভাব পড়বে, সেটা বিবেচনা করতে হবে।

“সবসময় যদি সরকারকে ভর্তুকি দিতেই হয়, তাহলে কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নয়ন ব্যাহত হবে। কাজেই সকল দিক বিচার বিবেচনা করে দাম বাড়াতে হয়েছে। এতে করে কিছু কিছু মানুষ প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পরোক্ষভাবে আমরা সবাই লাভবান হব।  সার্বিক অর্থনীতির উপরে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।”

গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিরোধিতাকারীরা বলছেন, গ্যাসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সব পণ্যের দাম বাড়বে, কারখানার উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, এর প্রভাব পড়বে সাধারণ জনগণের ওপর।

উচ্চ দামে আমদানি করা এলপিজিতে ভর্তুকির ভার লাঘবের জন্য সরকার গ্যাসের দাম বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে বলে মনে করেছেন অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ীরা।

রাজ্জাক বলেন, “দেশে বড় প্রয়োজন শিল্প কারখানা গড়ে তোলা। ছেলেমেয়েরা শিক্ষা গ্রহণ করছে। তারা শিক্ষা শেষে কিন্তু এই ছেলেমেয়েরা গ্রামের মাঠে গিয়ে আর কৃষি কাজ করবে না। তাদের জন্য চাকরি দরকার। সেই চাকরির জন্য শিল্প কারখানা করা দরকার।

“আর শিল্প কারখানার জন্য সব থেকে বড় অন্তরায় ছিল জ্বালানি। আমরা এলএনজি বিদেশ থেকে আমদানি করে গ্যাস সরবারের চেষ্টা করছি।”

জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম জানতে জানতে চান, সংসদকে না জানিয়ে গ্যাসের দাম বাড়ানো আইনসম্মত কি না?

জবাবে মন্ত্রী রাজ্জাক বলেন, “এ বিষয়ে আমার বিস্তারিত জানা নেই। সংসদ সদস্য নোটিস দিলে সঠিক উত্তর পাবেন।”

গ্যাসের দাম বাড়ানোর সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতা ছাড়ে তখন বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল ৩ হাজার ২০০ মগাওয়াট। পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তারা এক ওয়াট বিদ্যুতও যোগ করতে পারেনি। এখন ১৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

“শিল্প–কারখানা সচল ও রপ্তানি আয় বাড়ানোর জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন আছে। সুতরাং রাজনীতি না করে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করতে হবে।”