পদ্মা সেতু: পিছিয়ে আছে নদী শাসনের কাজ

পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল অবকাঠামোর কাজ ৮১ ভাগ শেষ হলেও নদী শাসনের কাজ পিছিয়ে রয়েছে। একাজে অগ্রগতি হয়েছে ৫৯ শতাংশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 July 2019, 12:02 PM
Updated : 7 July 2019, 12:02 PM

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে প্রতিবেদনটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। তবে কমিটির সদস্যরা সংসদ অধিবেশন শেষে সরেজমিনে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

কমিটির সদস্য ছলিম উদ্দীন তরফদার সাংবাদিকদের বলেন, “সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ, বিশেষ করে পদ্মা সেতু ও উড়াল সেতুর কাজ যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হয়, সে বিষয়ের ওপর জোর দেওয়ার জন্য কমিটি মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করেছে।”

সরকারের অর্থায়নে সংযোগ সড়কসহ ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রাক্কলিত ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরের জুন পর্যন্ত পদ্মাসেতুর ২৬২টি পাইলের মধ্যে ২৫৬টি এবং ৪২টি পিয়ার কলামের মধ্যে ২৯টির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। গত ৩০ জুন ১৪তম স্প্যান বসানোর মধ্যদিয়ে ২ দশমিক ১ কিলোমিটার সেতু দৃশ্যমান হয়েছে।

পদ্মা সেতুর চতুর্দশ স্প্যান বসানো হয় গত ৩০ জুন

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এ বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের জাজিরা ও মাওয়ার সংযোগ সড়ক এবং সার্ভিস এরিয়া-২ এর নির্মাণ কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি দেখানো হয়েছে ৭১ ভাগ।

আরও বলা হয়েছে, সেতুর উভয় পাড়ে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫৭টি গাছ লাগানো হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকায় একটি জাদুঘর স্থাপনের কাজ চলমান। এই জাদুঘরে রাখার জন্য ২ হাজার ২৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মাঝে গত জুন পর্যন্ত ৬৪১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত সহায়তা বাবদ বিতরণ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

একই সঙ্গে পুনর্বাসন এলাকায় নির্মিত ২ হাজার ৬৯০টি প্লট ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৬৯৭টি ভূমিহীন পরিবারকে বিনামূল্যে প্লট দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় থেকে আরও জানানো হয়, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেওয়ের কাজ ২০২২ সালের মার্চ নাগাদ শেষ হবে। এ সংক্রান্ত অগ্রগতির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড়াল সেতুর ১৪৭টি স্প্যানে আই গার্ডার বসানো হয়েছে।

সংসদীয় কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কমিটি বিআরটিসির ডিপো ম্যানেজারদের দায়িত্ব পালনে আরও বেশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

এছাড়া বৈঠকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের কাজ দ্রুত ও টেকসই করতে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি মো. একাব্বর হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এনামুল হক, মো. হাসিবুর রহমান স্বপন, আবু জাহির, রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক, ছলিম উদ্দীন তরফদার, শেখ সালাহউদ্দিন, সৈয়দ আবু হোসেন ও রাবেয়া আলীম বৈঠকে অংশ নেন।