তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ করতে বিনিয়োগের পরামর্শ

দেশের জনমিতিক সুবিধার (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) সদ্ব্যবহার করতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপি‘র ৩৮ থেকে ৩৯ শতাংশে উন্নীত করার সুপারিশ এসেছে এক আলোচনা থেকে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2019, 07:21 PM
Updated : 2 July 2019, 07:21 PM

একইসঙ্গে তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ ২০৩০ সালের মধ্যে জিডিপি‘র ৫ শতাংশে উন্নীত করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার ‘জনমিতি সুবিধা অনুধাবন : তরুণদের জন্য বিনিয়োগ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে এই পরামর্শ আসে।

ঢাকার মহাখালী ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়েমা হক বিদিশা।

সানেম ও একশন এইডের যৌথ আয়োজনের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলম, একশন এইডের আবাসিক পরিচালক ফারাহ কবির বক্তব্য রাখেন।

সায়েমা হক বলেন, “দেশের জনমিতি সুবিধা নিতে হলে আগামী বাজেটগুলোতে দক্ষ যুব শক্তি গড়ে তুলতে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে বর্তমানে আমাদের যে দক্ষ জনশক্তির অভাব রয়েছে, চাহিদা অনুযায়ী সেসব জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।”

বর্তমানে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে তা টেকসই উন্নয়ন (এসডিজি) চাহিদার বিপরীতে যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন তিনি।

“বর্তমানে জিডিপির ২ শতাংশের বেশি বরাদ্দ দেওয়া হলেও তাতে পেনশন অন্তর্ভুক্ত থাকায় এটা বেশি কার্যকর হচ্ছে না। পেনশনকে এ খাত থেকে বের করে দিতে হবে।”

সায়মা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বেকারত্ব কমিয়ে এনে এসডিজি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হলে ৯ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি করতে হবে। বর্তমানে বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপি‘র মাত্র ২২/২৩ শতাংশ হলেও তা ৩৮/৩৯ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে।

ওই বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতে সরকারকে জিডিপির ৫ শতাংশ বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেন তিনি।

এছাড়াও আগামীতে লিঙ্গ, শিশু এবং যুব বাজেট করা যায় কীনা, পরামর্শ রাখেন সরকারের কাছে। এসব খাতের উন্নয়ন যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে সে প্রকল্পগুলোর মান নিশ্চিত করার জন্য পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

সায়েমা বলেন, “আমাদের প্রায় ২৯ শতাংশ যুব মহিলা চাকরিতে আসার যোগ্য। তাদের চাকরিতে আসার সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধান করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, “শিক্ষিতদের চাহিদা অনুযায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি এখন পৃথিবীর সকল দেশের জন্যই চ্যালেঞ্জের। এই চ্যালেঞ্জ আমাদেরও রয়েছে। তবে বেকারত্ব একটি সমস্যা, এটা ঠিক হলেও যারা কাজ দেয় তারাও দক্ষ লোক পাচ্ছে না। কর্মসংস্থানের মধ্যেও মিস ম্যাচ আছে।”

ড. শামসুল আলম বলেন, “চারটি কৌশল দিয়ে এসডিজি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা আমাদের রয়েছে। এরমধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রাম আর শহরের ব্যবধান কমিয়ে বৈষম্য কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়াও গ্রামীণ মানুষের জন্য বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থাকে সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে।”

গবেষণার জন্য দেশের বেসরকারি বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোকে অর্থায়নের আহ্বান জানান তিনি।