ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুযোগ: হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত

ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলারের ওপর হাই কোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে স্থগিত হয়ে গেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2019, 12:39 PM
Updated : 8 July 2019, 06:54 AM

মঙ্গলবার অর্থ বিভাগের এক আবেদনে চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান হাই কোর্টের আদেশ ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। 

অর্থ বিভাগের পক্ষে চেম্বার আদালতে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে ১০ বছরে খেলাপি ঋণ পরিশোধের সুযোগ দিয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছিল।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের আবেদনে গত ২১ মে হাই কোর্ট ওই সার্কুলারের উপর ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজার রাখার জন্য আদেশ দেয়। এরপর ২৪ জুন স্থিতাবস্থার মেয়াদ আরও দুইমাস বাড়ানো হয়।

হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে অর্থ বিভাগ চেম্বার আদালতে আবেদন করলে বিচারক মঙ্গলবার তা স্থগিত করে দেন।

ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারের ওপর হাই কোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশের কোনো কার্যকারিতা আপাতত থাকল না।

চেম্বার আদালতের আদেশের পর রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, তারা এই রিট আবেদন করার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ঋণ খেলাপিদের তালিকা চেয়েছিল হাই কোর্ট। ওই তালিকা দেওয়ার আগেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণ পরিশোধের সুযোগ দিয়ে সার্কুলার জারি করে।

“বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারি করে যদি ঋণ খেলাপিদের এই সুযোগ দেয় তাহলে তো ঋণখেলাপিরা আর ঋণ খেলাপি থাকছে না। তখন তো আদালত ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন না। আসলে মূল মামলাটিকে (রিট মামলাটি) অকার্যকর করার জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক এই সার্কুলার জারি করেছিল।”

মনজিল বলেন, পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি করে সর্বোচ্চ আদালত যে আদেশ দেবে, তা মেনে নিতে হবে।

“প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। আদালতে আমি সেটাও দেখালাম। অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনা করা হয় এই মামলাটি সেভাবে বিবেচনা না করে একটি বৃহৎ স্বার্থে চিন্তা করতে হবে। কারণ এটা একটা জনস্বার্থের মামলা।”

‘ঋণ খেলাপি ব্যবসায়ীরাই অর্থ মন্ত্রণালয়কে দিয়ে’ স্থিতাবস্থার আদেশের বিরুদ্ধে ওই আবেদন করিয়েছে বলে মন্তব্য করেন এই আইনজীবী।