নড়বড়ে সেতু দ্রুত মেরামতের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

দেশের রেল ও সড়ক পথের নড়বড়ে সব সেতু ও কালভার্ট চিহিত করে দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 June 2019, 03:26 PM
Updated : 25 June 2019, 03:26 PM

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তার এই নির্দেশ আসে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

ঢাকার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভার পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, “বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দেশে রেল ও সড়ক পথের নড়বড়ে সেতু চিহ্নিত করতে জরিপের কাজও দ্রুত শেষ করতে বলেছেন।”

বৈঠকে ২৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২১ রেল ইঞ্জিনের পুনর্বাসনের একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটি অনুমোদনকালে গত রোববার কুলাউড়ায় রেল দুর্ঘটনার বিষয়টি উঠে এলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আসে।

গত রোববার সিলেট থেকে ঢাকামুখী আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়লে চার জন নিহত এবং শতাধিক যাত্রী আহত হয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “নড়বড়ে রেল ও সড়ক সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী উদ্বিগ্ন। এ জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দ্রুত মাঠে নেমে পড়তে বলেছেন। যেসব সেতু ও কালভার্ট নড়বড়ে কিংবা সেগুলোতে সমস্যা হয়েছে সেগুলো তাড়াতাড়ি সংষ্কারের ব্যবস্থা করতে বলেছেন।” 

বিভাগীয় শহর ছাড়া আরও কোথাও সিটি কর্পোরেশন না করা এবং সব জেলার সরকারি অফিস ভবন অভিন্ন নকশায় নির্মাণ করারও নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী দেন বলে জানান মান্নান।

“এখন থেকে সব জেলার সরকারি অফিস ভবনগুলো অভিন্ন নকশায় নির্মাণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে নকশা একই হলেও বড়, মাঝারি ও ছোট জেলার জন্য ভবনের আয়তন ভিন্ন ভিন্ন হবে।”

মঙ্গলবারের একনেক সভায় ছয় হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থাকছে ২৪১ কোটি টাকা এবং ৪০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বিদেশি অনুদান হিসেবে।।

মান্নান জানান, “আন্তঃজেলা সংযোগ আরও সহজ করতে কোনো কোনো রাস্তা প্রশস্ত করতে একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এতে গ্রামীণ সড়ক, আন্তঃজেলা মহাসড়ক এবং জাতীয় মহাসড়কের আলাদা তালিকা করার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।”

সভায় তিন হাজার ৮২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা প্রশস্তকরণসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণের অন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয় ।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে প্রায় ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে অন্য একটি প্রকল্প সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পে জাপান সরকার প্রায় ৪০ কোটি টাকা অনুদান দেবে।

তিনি বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে জাপানিদের। বাংলাদেশে যেন আর এমন ভয়াবহ জঙ্গিহামলার মতো ঘটনা না ঘটে সেটাই সবার কাম্য। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশে যে সব  জায়গায় বিদেশিরা কাজ করেন সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

একনেক বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে

>> বামনডাংগা (গাইবান্ধা)-শঠীবাড়ী-আফতাবগঞ্জ (দিনাজপুর) জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প।

>> ঢাকা অফিসার্স ক্লাবে ক্যাম্পাসে বহুতল ভবন নির্মাণ, মানিকগঞ্জ বহুতল বিশিষ্ট সমন্বিত সরকারি অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্প।  

>> ঢাকাস্থ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প।

>> দুস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন  কেন্দ্র পুনঃনির্মাণ (গাজীপুর) প্রকল্প।

>> বৃহত্তর ফরিদপুর সেচ এলাকা উন্নয়ন (৪র্থ পর্যায়) এবং

>> ওয়েস্টজোন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও হালনাগাদকরণ প্রকল্প।