খেলা ছাড়ার পর খেলোয়াড়দের জীবন সহজ করার ভাবনা প্রধানমন্ত্রীর

দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনা ক্রীড়াবিদদের যেন বুড়ো বয়সে কষ্টে পড়তে না হয়, সেজন্য পুর্নবাসন পরিকল্পনা সাজানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 June 2019, 12:31 PM
Updated : 25 June 2019, 12:31 PM

বিশ্বকাপ অভিযানে থাকা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, খেলোয়াড়দের জন্য তিনি আরও সুযোগ সুবিধা দিতে চান।   

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এসব বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকের পর পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন। 

মন্ত্রী বলেন, “খেলা নিয়ে সবাইকে প্রশংসা করেছেন। তাদেরকে তিনি সন্তানের মত মনে করেন। সাকিব, মুশফিক এদের সম্পর্কে খুব ভালো মন্তব্য করেছেন। এদেরকে নিয়ে আরও কিছু করতে চান। এদেরকে আরও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন।”

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুরের কিশোরী ফুটবলারদের সুযোগ সুবিধা বাড়াতেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান মান্নান।

তিনি বলেন, “উনার নির্দেশনাটা হল খেলোয়ারদের শুধু খেলাকালীন সময়ে নয়… এখন তারা তরুণ, কিন্তু যখন পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের মত বার্ধক্যে যাবে, তখন খুব কষ্ট হয়।

“প্রধানমন্ত্রী এ সম্পর্কে অবহিত। কম বয়সে খরচ করে ফেলে, টাকা জমায় না। ঠকা খায়। নানা ধরনের সমস্যায় পড়ে যায়। তিনি বলছেন, আমরা এটা হতে দেব না।”

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “এখন যেমন তাদেরকে সাহায্য দেব, তাদের মাথায় হাত রাখব, পরবর্তী পর্যায়েও তারা যেন নিচে পড়ে না যায়, সেজন্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে সুনির্দিষ্ট অর্ডার দিয়েছেন (প্রধানমন্ত্রী), তাদের জন্য প্রকল্প নিয়ে আসতে বলেছেন।

“আমাদের বিভিন্ন সেক্টর, করপোরেশন, বা প্রাইভেট সেক্টর বা সরকার– বিভিন্ন জায়গায় তাদের (ক্রীড়াবিদ) চাকরি-বাকরি দিয়ে পুনর্বাসনের একটা ব্যবস্থা করার জন্য বলেছেন তিনি।”

অনুশীলনের জন্য তহবিল

খেলোয়াড়রা সারা বছর যেন খেলাধুলার চর্চা চালিয়ে যেতে পারেন, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী তহবিলের ব্যবস্থা করতে বলেছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

“প্রধানমন্ত্রী আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন, খেলা এলেই প্র্যাক্টিস শুরু হয়। তারপর আর খবর নাই। তার কথা হল, যে খেলোয়াড়, পেশাজীবী– সে সারা বছরই প্র্যাক্টিস করবে। খেলোয়াড় তো নিজের পয়সায় করবে না, কেন করবে? তিনি চান, একটা ভালো তহবিল থাকবে, যাতে এই তহবিলের আওতায় তারা সারা বছর প্র্যাক্টিস করতে পারে।”

মান্নান বলেন, সংশ্লিষ্ট খেলার জন্য যে কর্তৃপক্ষ আছে, তারাই সারা বছর অনুশীলনের ব্যবস্থা করে দেবে। সরকার শুধু টাকা দেবে।

“তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সরাসরি অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন, এর জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে হবে।”

‘তীর, ধনুক যেন মরে না যায়’

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, শুধু ক্রিকেট নয়, ফুটবল, হকি, ভলিবল, বাস্কেটবল- সবধরনের খেলাকেই সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

“শুটিং আর আর্চারিতেও আমাদের সম্ভাবনা আছে। সেখানে ইনটেনসিভ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।”

এম এ মান্নান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী এটাও বলেছেন, শুধু পশ্চিমা আর্চারি নয়, আমাদের এখানে তীর, ধনুক, বল্লম রয়েছে। আমাদের সাঁওতালরা ব্রিটিশদেরকে তীর, ধনুক দিয়ে তাড়াতে চেয়েছিল। সেই তীর, ধুনকও যাতে মরে না যায়, বিকশিত হয়- সেজন্য তহবিল, প্রশিক্ষণের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।”