ঈদের কারণে মে মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে

এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি আরও কিছুটা বেড়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2019, 02:33 PM
Updated : 10 Dec 2019, 04:13 PM

তবে এবার খাবারের দাম বাড়ার কারণে নয়, খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের দাম বাড়ায় বেড়েছে অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই সূচক।

বিবিএস বলছে, ঈদকে সামনে রেখে খাবারের বাইরে অন্য সব পণ্যের দাম বাড়ায় মে মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

অর্থাৎ গত বছরের মে মাসে কোনো পণ্য বা সেবা কিনতে ১০০ টাকা খরচ হলে এই বছরের মে মাসে সেই একই সেবা বা পণ্যের জন্য গুণতে হয়েছে ১০৫ টাকা ৬৩ পয়সা।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এই তথ্য তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিধেয় বস্ত্র, আবসাবপত্র  ও গৃহস্থালী পণ্যের দাম মে মাসে বেড়েছে। পরিবহন ভাড়া এবং চিকিৎসা খরচও ছিল বেশি।

সংবাদ সম্মেলনে মূল্যস্ফীতি কারণ ব্যাখ্যা করে বিবিএসের মহাপরিচালক  কৃষ্ণা গায়েন বলেন, ঈদের কারণে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের  দাম বাড়তি ছিলো। সে কারণে মে মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে।

“তবে এখন এই সূচক স্বাভাবিক হয়ে আসবে।”

বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে খাদ্য বহিভূর্ত মূল্যস্ফীতি বেড়ে  হয়েছে ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এপ্রিল মাসে ছিল ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

 মে মাসে গ্রামীণ ও শহর উভয় এলাকায়ও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।  এ মাসে গ্রামে  মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ।

গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশে। এপ্রিল মাসে যা ছিল ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। গ্রামে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৫ দশমিক ০১ শতাংশ , যা এপ্রিলে ছিল  ৪ দশমিক  ৮৯ শতাংশ।

মে মাসে শহর এলাকায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এপ্রিলে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এই মাসে শহরে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে  ৫ দশমিক ০ ৯ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ২২  শতাংশ।

মে মাসে শহরে খাদ্য বহিভর্হৃত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, এপ্রিলে ছিল ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে রাখার রাখার লক্ষ্য ঠিক করে আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয় মেয়াদের সরকারের প্রথম বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন তাতে তিনি লক্ষ্য ঠিক করেছেন।

বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই সূচক ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন তখনকার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

মে মাস শেষে (২০১৮ সালের জুন থেকে ২০১৯ সালের মে পর‌্যন্ত) গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

গত বছরের এই সময়ে (২০১৭ সালের জুন থেকে ২০১৮ সালের মে) গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ।