পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এই নির্বাহী পরিচালক বলেছেন, এনবিআরের সংস্কার না হলে বাংলাদেশ কখনোই রাজস্ব ঘাটতির চক্র থেকে বের হতে পারবে না।
তার ভাষায়, কাঠামোগতভাবে এনবিআর একটি প্রশাসনিক সংস্থা। কর ও শুল্ক কেমন হবে সে বিষয়ে নীতি তৈরির দক্ষতা তাদের নেই।
“ফলে এখন তারা সেভাবেই নীতি কাঠামো তৈরি করে, যেটা প্রশাসনিকভাবে বাস্তবায়ন করা সহজ হবে।”
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর প্রতিক্রিয়া জানাতে সোমবার ঢাকার একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (অ্যামচেম) আয়োজিত ভোজসভায় আহসান এইচ মনসুরের এ বক্তব্য আসে।
অ্যামচেম সভাপতি নুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলামও এ ভোজসভায় অংশ নেন।
পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রশ্নে এনবিআরের সংস্কার নিয়ে নিজের ভাবনার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এই নির্বাহী পরিচালক।
তিনি বলেন, এনবিআরের দায়িত্ব হল আইন ও নিয়মের বাস্তবায়ন করা, আইন বা নিয়ম তৈরি করা নয়।
কিন্তু এনবিআরই এখানে কর সংক্রান্ত নীতি কাঠামো তৈরি করে, যার ফলে স্বার্থের সংঘাত তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন আহসান মনসুর।
“প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে তারা যে কোনো প্রকারে রাজস্ব আদায় বাড়াতে চায়। এটা অর্থনীতি কীভাবে কাজ করে সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণার অভাব এবং যার পর নাই অবহেলা ছাড়া আর কিছু না।”
বাজেটে যে ভ্যাট কাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছে, সেখানেও একই ব্যাপার ঘটেছে বলে মনে করছেন আহসান মনসুর।
“প্রশাসনিকভাবে হয়ত এতে কাজটা সহজ হয়। কিন্তু এটা কখনোই কাঙ্ক্ষিত নয়। ফলে নীতি তৈরি এবং বাস্তবায়নের জন্য আলাদা প্রশাসনিক কাঠামো রাখাটাই বিশ্বজুড়ে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর, বাংলাদেশেও তাই হওয়া উচিৎ।”
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য সোয়া পাঁচ লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের সামনে উপস্থাপন করেন। বাজেটের এই আকার গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৮ শতাংশ বেশি।
এই বাজেট প্রস্তাবে ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের পাশাপাশি স্মার্ট ফোনের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, স্মার্টফোন ব্যবহার করে ‘বিত্তবান লোকজ ‘, এ কারণে তিনি শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করছেন।
এর সমালোচনা করে আহসান মনসুর বলেন, দেশে স্মার্টফোন এখন আর বিলাসিতার বস্তু নয়।