তিনি বলেছেন, সরকার কৃষিতে প্রণোদনা দেয় বলেই কৃষক অল্প ব্যয়ে বেশি ফলন পাচ্ছে।
শুক্রবার ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এই কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার নতুন অর্থবছরের জন্য সোয়া পাঁচ লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব জাতীয় সংসদে উপস্থান করেন।
তিনি অসুস্থ থাকায় শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে তিন কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির যে পরিকল্পনার কথা বাজেটে আছে, সরকার তা কীভাবে বাস্তবায়ন করবে- তার রূপরেখা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান একজন সাংবাদিক।
উত্তর দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “কর্মসংস্থানের কথা আমরা বলেছি, চাকরি দেওয়ার কথা বলিনি। এবার ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রেখেছি। শিক্ষার কথা বলেছি, প্রযুক্তি শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, ভোকেশনাল শিক্ষা। আমরা চাই ট্রেনিং নিয়ে শিক্ষিত হয়ে নিজের কাজ নিজে করার একটা সুযোগ পাক।”
দেশে তিন কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “১৬ কোটি মানুষকে চাকরি দেওয়া যায় না, কোনো দেশে তা হয় না। মানুষ যেন কাজ করে খেতে পারে সেই সুযোগটা সৃষ্টি করা। একটা অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সে কারণেই এটা সম্ভব। কর্মসংস্থান নিজেকে সৃষ্টি করতে হবে। অন্যদের কাজের ব্যবস্থা হবে।”
এবারের বোরো মৌসুমে ধানের ভাল ফলন হলেও কৃষকরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠে। ধান কাটার শ্রমিকের অভাব এবং ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার কারণে বিভিন্ন এলাকায় ধান ক্ষেতে কৃষকের আগুন লাগানোর ঘটনা সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে।
“তা করছি বলেই এত ধান উৎপাদন হচ্ছে। তা না হলে এত বেশি ধান অতীতেও উৎপাদন হয়নি, এখনও হত না। সেটা আমাদের প্রণোদনা দেওয়ার ফলেই।
“কাজেই কৃষকদের ভালমন্দ যা আমাদের দেখার সেটা আমরা দেখে যাচ্ছি। আর দেখে যাচ্ছি বলেই আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, বাংলাদেশ সারাবিশ্বে ধান উৎপাদনে চতুর্থ।”
শেখ হাসিনা বলেন, ধান উৎপাদনে যে পরিমাণ প্রণোদনা দেওয়া হয়, তাতে কৃষকের নিজের ‘খুব অল্প অর্থ’ ব্যয় হয়।
“বেশি উৎপাদন হলে কৃষক বেশি ধান-চাল বিক্রি করতে পারবে। তাতেও বেশি টাকা পাবে। আর সরকার তো ধান ক্রয় করছেই। এটা নীতিমালা মেনেই নিচ্ছি, করে যাচ্ছি। কৃষি যন্ত্রপাতি সংগ্রহে আমরা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের মত প্রণোদনা দিচ্ছি। যত সুযোগ দরকার সবই দেওয়া হচ্ছে।“
বাজেট পরবর্তী এই সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর পাশেই বসেছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
এছাড়া শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ূন, পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূইয়া। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার।