বাজেট: সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ছে

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নতুন অর্থবছরের জন্য যে বাজেট প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আরও বেশি মানুষকে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2019, 02:24 PM
Updated : 13 June 2019, 02:24 PM

বৃহস্পতিবার বাজেট বক্তৃতায় মন্ত্রী বলেন, আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মোট ৭৪ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা বাজেটের ১৪.২১ শতাংশ এবং জিডিপির ২.৫৮ শতাংশ।

চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে এ বাবদে ৬৪ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল।

বর্তমানে দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ পরিবারকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসার কথা বলছে সরকার। আর আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার ৫ বছরে এ খাতে বরাদ্দ দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকা এবং বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ৪০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪৪ লাখে উন্নীতের প্রস্তাব রেখেছেন অর্থমন্ত্রী।

বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতাভোগীর সংখ্যা ১৪ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১৭ লাখ এবং অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধীদের ভাতা দেওয়ার জন্য ভাতাভোগীদের সংখ্যা ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ ৪৫ হাজারে উন্নীত করার প্রস্তাব করেছেন তিনি। 

প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তির সংখ্যা ৯০ হাজার থেকে এক লাখ জনে বৃদ্ধি করে উপবৃত্তির হার প্রাথমিক স্তরে ৭০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৮৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯০০ টাকা করার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

এছাড়া সকল হিজড়াকে অন্তর্ভুক্ত করে হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ৬ হাজারে উন্নীত করা এবং বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উপকারভোগীর সংখ্যা ৬৪ হাজার থেকে ৮৪ হাজারে বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন কামাল।

ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড ও জ্ন্মগত হৃদরোগীদের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার থেকে ৩০ হাজারে বৃদ্ধি, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজারে বৃদ্ধি এবং দরিদ্র মার জন্য মাতৃত্বকালীর ভাতাভোগীর সংখ্যা ৭ লাখ থেকে ৭ লাখ ৭০ হাজারে উন্নীতকরণ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে বাজেটে।

এর বাইরে কর্মজীবী স্তন্যদায়ী মায়েদের সহায়তার আওতায় ভাতাভোগীর সংখ্যা আড়াই লাখ থেকে বাড়িয়ে পৌনে তিন লাখ করার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী কামাল।

তিনি বলেন, “সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কার্যকারিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সঠিক উপকারভোগী নির্বাচন নিশ্চিত করার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে সকল কর্মসূচির এমআইএস এবং উপকারভোগীর তথ্যভাণ্ডার প্রস্তুত এবং ভাতাভোগীদের নিকট সরাসরি সরকারি কোষাগার থেকে জিটুপি পদ্ধতিতে অর্থ পাঠানো হচ্ছে।”

কোনো প্রতিষ্ঠান কর্মীদের মধ্যে ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে নিয়োগ দিলে সেই প্রতিষ্ঠানের প্রদেয় করের পাঁচ শতাংশ মওকুফ করার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে।

পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) প্রতিবন্ধীদের যাতায়াত ও সেবা গ্রহণে বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা না করলে অতিরিক্ত পাঁচ শতাংশ হারে আয়কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী এই ঘোষণা দেওয়া হলেও ২০২০-২১ করবছর থেকে তা কার্যকর করা হবে বলে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন।