মঙ্গলবার এই গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন বিআইপির সাধারণ সম্পাদক আদিল মুহাম্মদ খান।
জাতীয় গড় মানের উপর ভিত্তি করে আঞ্চলিক মানের তুলনা করতে গিয়ে বিআইপি অবলম্বন করেছে লোকেশন কোশেন্ট (এলকিউ) অ্যানালাইসিস পদ্ধতি, যার ভিত্তি মান ১। এলকিউ (পপুলেশন) ও এলকিউ (এরিয়া) দুইভাবে পরিসংখ্যান করেছে তারা।
বৈষম্য পরিমাপ করতে গিয়ে তারা আরও ব্যবহার করেছে গিনি কো-এফিসিয়েন্ট অ্যানালাইসিস পদ্ধতি, যার ভিত্তি মান ০-১।
এছাড়া অঞ্চলভিত্তিক এডিপি বরাদ্দের শতকরা হারকেও বিবেচনায় এনেছে তারা।
এলকিউ (পপুলেশন) পদ্ধতির বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এডিপি বরাদ্দের ৩৮.৫৪ শতাংশ আসে ঢাকা জেলায়। ঢাকার এলকিউ মান ১.৫২, যা ভিত্তি মানেরও বেশি। চট্টগ্রামে এর মান ১.৪১। সবচেয়ে কম বরাদ্দের দিকে রয়েছে রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগ। এই দুই বিভাগে বাজেট বরাদ্দের শতকরা হার যথাক্রমে ৩.১৩ ও ৩.৫৩। এলকিউ মান এসেছে ০.২৯ ও ০.৪৬।
এডিপি বরাদ্দে জেলাভিত্তিক তুলনামূলক চিত্র
জনসংখ্যার বিপরীতে জাতীয় গড় বরাদ্দকে ভিত্তি ধরে গবেষণায় দেখা গেছে, এডিপি বরাদ্দের সবচেয়ে বেশি যায় ঢাকা জেলায়। সবচেয়ে কম বরাদ্দ আসে উত্তর-পশ্চিমের জেলাগুলোতে।
এলকিউ রেট সবচেয়ে বেশি ঢাকায় ২১.২, সবচেয়ে কম ০.১ এসেছে মাগুরা জেলায়।
এলকিউ (পপুলেশন) রেট সবচেয়ে বেশি এসেছে গোপালগঞ্জে, মান ৬.৬। সবচেয়ে কম রেট ০.২ এসেছে জয়পুরহাট, লক্ষ্মীপুর, গাইবান্ধা, মাগুরা ও দিনাজপুর জেলাতে।
জেলার আয়তনের বিপরীতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে জাতীয় গড় বরাদ্দকে ভিত্তি করে গবেষণায় এলকিউ (এরিয়া) রেট সবচেয়ে বেশি এসেছে ঢাকায় ২১.৩৫। সবচেয়ে কম রেট ০.০৮ এসেছে রাঙামাটিতে।
আদিল জানান, এই গবেষণায় তারা দেখেছেন সবচেয়ে কম বাজেট যাচ্ছে নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা ও জয়পুরহাটে।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের পূর্ব ও পশ্চিমের অঞ্চলগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক বৈষম্য বিদ্যমান। উত্তর অঞ্চলে দারিদ্র্য যেখানে বেশি, সেসব এলাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বরাদ্দ তুলনামূলকভাবে অপ্রতুল।
“এডিপি বরাদ্দের শতকরা ২১ দশমিক ১৭ শতাংশ পাচ্ছে ঢাকা বিভাগ, যা সুষম ও টেকসই আঞ্চলিক উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য অন্তরায়।”
বিআইপির সহ-সভাপতি আকতার মাহমুদ বলেন, “বার্ষিক উন্নয়ন বরাদ্দের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনা গুরুত্ব পাচ্ছে। অঞ্চলভিত্তিক উন্নয়নের জন্য এই চর্চা বন্ধ করতে হবে। যেসব জেলা এখনও পিছিয়ে আছে, সেগুলোর দারিদ্র্য বিমোচনে নতুন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। বাজেটের সেক্টরাল অ্যালোকেশন দরকার।”
পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলোর উন্নয়নে জেলা ও উপজেলায় নেওয়া নানা মাস্টারপ্ল্যানের দ্রুত বাস্তবায়ন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিকেন্দ্রীকরণ ও দুর্গম অঞ্চলে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।