২৪ দিনেই ১.৩৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স

ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা দেশে বেশি বেশি টাকা পাঠাচ্ছেন। চলতি মে মাসের ২৪ দিনেই ১৩৫ কোটি (১.৩৫ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন তারা।

আবদুর রহিম হারমাছিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2019, 05:19 PM
Updated : 3 June 2019, 12:23 PM

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৫ অথবা ৬ জুন ঈদ অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে মে মাসের শেষ সপ্তাহে রেমিটেন্স প্রবাহ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, রেমিটেন্স প্রবাহ এমনিতেই ভালো ছিল। রোজা এবং ঈদকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি বেশি টাকা পাঠাচ্ছেন। সে কারণেই রেমিটেন্স বাড়ছে।

এক মাসের হিসাবে মে মাসে অতীতের যে কোন মাসের চেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসবে। আর অর্থবছর শেষে এবার রেমিটেন্সের পরিমাণ ১৬ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম।

এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, ১৫৯ কোটি ৭২ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার রেমিটেন্সের যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি মে মাসের ২৪ দিনে (১মে থেকে ২৪মে পর‌্যন্ত) ১৩৫ কোটি ৬ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে। এরমধ্যে ১ থেকে ৩ মে এসেছে ১১ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। ৪ থেকে ১০ মে এসেছে ৪৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।১১ থেকে ১৭ মে এসেছে ৪৯ কোটি  ৫৩ লাখ ডলার। আর ১৮ থেকে ২৪ মে এসেছে ৩৫ কোটি ডলার।

তার আগে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এক হাজার ৩৩০ কোটি ৩০  লাখ (১৩.৩০ বিলিয়ন) রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা ছিল গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি।

মে মাসের ২৪ দিনের ১৩৫কোটি ডলার যোগ করলে চলতি অর্থবছরে মোট রেমিটেন্সের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৬৫ কোটি ৩৪ লাখ (১৪.৬৫ বিলিয়ন) ডলার।

অর্থবছরের বাকি ১ মাস ৭ দিনে কম করে হলেও দেড় বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স আসবে। সে হিসাবেই প্রত্যাশা করা হচ্ছে এবার অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে রেমিটেন্স ১৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ১৭ লাখ (১৪.৯৮ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা।

যা ছিল ২০১৬-১৭ অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি।

তারই ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরেও রেমিটেন্স বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে।

রেমিটেন্স বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশী মুদ্রার সঞ্চয়নও (রিজার্ভ) সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। রোববার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।

গত ৭ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের ১২৪ কোটি ১০ লাখ ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পরও রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করছে মূলত: রেমিটেন্স বৃদ্ধির কারণে।

বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ- এই নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যে সব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।

স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

আন্ত:ব্যাংক মুদ্রাবাজারে সোমবার প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে। এর বছর আগে ২২ মে ডলার-টাকার বিনিময় হার ছিল ৮৩ টাকা ৭০ পয়সা।

বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাদের পাঠানো অর্থ বাংলাদেশে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে

 বাংলাদেশের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মত।