কৃষকদের স্বার্থে চাল আমদানি সীমিত হবে: অর্থমন্ত্রী

দেশের কৃষকদের বাঁচানোর জন্য চাল আমদানি সীমিত করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2019, 12:32 PM
Updated : 19 May 2019, 12:37 PM

ধানের দাম নিয়ে কৃষকদের হতাশার মধ্যে আসছে বাজেট নিয়ে রোববার এক আলোচনায় একথা জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “দেশের কৃষকদের স্বার্থে আমরা অবশ্যই আমদানি রেস্ট্রিক্টেড করব। কিন্তু আমরা তো এটা (রপ্তানি) ব্যান করে দিতে পারব না।”

এবার বোরো ধান আবাদ করে উৎপাদন খরচ উঠছে না বলে সারাদেশে কৃষকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে।

ধানের উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে দাবি করে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক শনিবার বলেছিলেন, উদ্বৃত্ত ফসল রপ্তানি করে এই সঙ্কটের আপাত সমাধান সম্ভব।

তবে চালের ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, “বাইরে যদি ডিমান্ড থাকত, আমরা রপ্তানি করতাম। বাইরেও চাহিদা নাই।”

‘আগামী বাজেটে কৃষকের পক্ষে শাইখ সিরাজের সুপারিশমালা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সম্মেলন কক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।

ভবিষ্যতে কৃষির উৎপাদন ব্যয় কমানোর জন্য কৃষকের আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করেন মুস্তফা কামাল।

“এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে কৃষকরা উপকৃত হবেন। এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে উৎপাদন বাড়বে, খরচ কমবে।”

তিনি ভর্তুকি দিয়ে সবজি রপ্তানিতে সাফল্যের দিকটি দেখিয়ে বলেন, “একসময় সবজিতেও এরকম হচ্ছিল। কৃষকরা দাম পাচ্ছিল না। আমরা ভর্তুকি দিয়ে রপ্তানির ব্যবস্থা করলাম। এরপর সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন চার নম্বরে। রপ্তানির বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়েছে। সবজিতে অন্তত দামটা পাচ্ছেন কৃষকরা।”

“প্রয়োজনে চালও ভর্তুকি দিয়ে রপ্তানি করতে পারি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব,” বলেন মুস্তফা কামাল।

উৎপাদন খরচ না পেলে কৃষকরা উৎসাহ হারাবেন- স্বীকার করে তিনি বলেন, “আমি মনে করি, সরকারের নৈতিক দায়িত্ব এগুলো সমাধান করা।”

শাইখ সিরাজ তার সুপারিশমালা তুলে ধরে বলেন, ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ন্যায্য মূল্যে ধান ক্রয়ের উদ্যোগকে আরও বাস্তবমুখী করতে হবে।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করে কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়াতে শষ্যবীমা স্থায়ীভাবে চালু করতে হবে।

এছাড়া কৃষিপণ্যের উন্নত ও আধুনিক বাজার ব্যবস্থা চালু করা, সরকারের বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির কার্যক্রমকে গতিশীল করা এবং বীজের মান নিশ্চিত করা, কীটনাশক আমদানি, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, কৃষির যান্ত্রিকীকরণে কৃষককে আরও অভ্যস্ত করে তোলার সুপারিশ করেন তিনি।

পোল্ট্রি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে প্রযুক্তি নির্ভরতা বাড়ানো, বীমা ব্যবস্থা চালু করা এবং এ খাতের বিদ্যুৎ বিল ও ঋণপ্রদানে কৃষিখাতের অনুরূপ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার সুপারিশও করেন শাইখ সিরাজ।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমার মন্ত্রণালয় থেকে যা যা করা দরকার, সেগুলোর প্রতিফলন আপনারা (বাজেটে) দেখতে পাবেন।”