মেঘনাঘাটে জিইর বিদ্যুৎ প্রকল্পে ‘শর্তসাপেক্ষে’ নীতিগত অনুমোদন

নারায়ণগঞ্জ জেলার মেঘনাঘাটে ৪৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাস-এলএনজি কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের একটি প্রস্তাবে ‘শর্ত সাপেক্ষে’ নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2019, 01:48 PM
Updated : 15 May 2019, 01:48 PM

বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, কনসোর্টিয়াম অব আনলিমা টেক্সটাইল ও জিই ক্যাপিটাল গ্লোবাল এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট জিভির ওই বিদ্যুৎি কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব এদিন কমিটির বৈঠকে তোলা হয়েছিল।

“তাতে চূড়ান্ত অনুমোদন না দিয়ে কমিটি কিছু শর্ত দিয়ে প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।…  আবার স্টাডি দরকার যে আমাদের এই মুহূর্তে চাহিদা কত এবং যোগান কত। চাহিদা ও যোগানের মধ্যে যাতে মিস ম্যাচ না হয়।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে কমিটির আপত্তি নেই। তবে দীর্ঘ মেয়াদে একই দামে গ্যাস সরবরাহের যে প্রস্তাব তারা করেছে, তা নিয়ে আপত্তি রয়েছে।

“যে টাকা চেয়েছে এটা এভাবে দেওয়া যাবে না, ২২ বছরের জন্য একবারে। আমরা বলেছি ২২ বছরে গ্যাসের দাম কী হবে না হবে… আমরা পাঁচ বছর পর পর রিভিউ করতে বলেছি, রিভিউ করে আন্তর্জাতিক বাজারে যে দাম থাকবে সেই টাকার পরিমাণ নিয়ে প্রকল্পটি আনা হলে অনুমোদন দেব।”

যৌথ বিনিয়োগের ওই কোম্পানি যদি সরকারের এই শর্ত না মানে, তাহলে কী হবে সাংবাদিকরা তা অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চান।

“যেভাবে এসেছে সেভাবে আমরা অনুমোদন দেব না। এটা এলএনজি বেইজড, গ্যাসের দাম ২২ বছরে সারা বিশ্বে কী হবে, এটা এখন বলা ইমপসিবল। এটা ছোট আকারে ৫ বছর করে করে নিয়ে আসতে হবে।”

মন্ত্রী বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা এখন যে স্টেজে আছি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে বলে দিয়েছি, তারা স্টাডি করে দেখবে এই মুহূর্তে আমরা কী পরিমাণ উৎপাদন করি এবং চাহিদা কী আছে। আগামী ৫, ১০ বা ২০ বছরে কী চাহিদা আসবে। সেভাবে রিপোর্ট দিলে আমাদের সুবিধা হবে। যাতে অলস ফেলে রেখে অর্থ না দিতে হয়। অলস পড়ে থাকলে সরকার তো কোন টাকা পাবে না।”

দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতি সেতু খুলছে ঈদের আগেই

দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতি সেতুর নির্মাণ কাজ শেষে ঈদের আগেই চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বুধবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে তিনি বলেন, “এ সেতু চালু হলে ঈদযাত্রায় যানজট কম থাকবে। প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন, তিনি নিজেই উদ্বোধন করবেন। অন্তত ওই পয়েন্টে যানজট থাকবে না।”

দ্বিতীয় কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতি সেতু এবং বর্তমান ব্র্রিজের সংস্কার প্রকল্পের ‘ভেরিয়েশেন’ প্রস্তাব সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নির্মাণ সময় বৃদ্ধি ও অন্যান্য কারণে ৭৮ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয় বেড়েছে।

সভায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ভোলা ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্যাস টারবাইন ইউনিট-১ এবং ২ এর পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য খুচরা যন্ত্রাংশ এবং এ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ সেবা সংগ্রহে ২০৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। জেনারেল ইলেকট্রিক এ কাজ করবে।

এছাড়া পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ দিতে একটি প্রকল্পের আওতায় ৬৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার সরঞ্জাম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে।

পাটকল শ্রমিকদের যেতে হবে ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে’

মজুরি কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নসহ নয় দফা দাবিতে আন্দোলনে থাকা পাটকল শ্রমিকদের নিয়ে কোনো পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে কিনা- তা মন্ত্রীর কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা।

জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমি তাদেরকে বলেছি, প্রধানমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করার জন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার বিশ্বাস কোনো না কোনোভাবে একটা সমাধান খুঁজে বের করবেন। তাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে হবে।”

মুস্তফা কামাল বলেন, “পাটকল আর আমরা কতদিন ফাইন্যান্স করব। গত ১০ বছরে আমরা সাত হাজার কোটি টাকা ফাইন্যান্স করেছি। এখন ফাইন্যান্সিং চলতেছে, ফ্যাক্টরি চলে না, বন্ধ। বেতন দিতে না পারলে…। আমি জানি না কীভাবে এটা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার মনে হয় ঠিকমত সুরহা করতে পারবেন।”