খেলাপি ঋণ মুক্তিতে জোর রেহমান সোবহানের

দেশে সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে ব্যাংক খাতকে খেলাপি মুক্ত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2019, 07:46 PM
Updated : 29 April 2019, 07:46 PM

তিনি বলেছেন, “দেশের মানুষ এখন ঋণ খেলাপি এবং শেয়ারবাজার নিয়ে সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, তার জন্য অপেক্ষা করছে।”

সোমবার সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস আয়োজিত দুদিন ব্যাপী আলোচনা সভার সমাপনী অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাজধানীর গুলশানে সিক্সসিজন হোটেলে এ আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান ছিলেন প্রধান অতিথি।

রেহমান সোবহান বলেন, “এদেশে জেনারেল জিয়ার আমল থেকেই বুর্জোয়ার আধিপত্য ও ঋণ খেলাপি সংস্কৃতি শুরু হয়। ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ গত চার দশকে কয়েকগুণ বেড়েছে। এটা থামানো যাচ্ছে না। দেশে সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে ব্যাংকিং খাতকে খেলাপি মুক্ত করতে হবে।”

বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে কৃষক, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ সবার মতামত উঠে আসে না বলে মন্তব্য করেন রেহমান সোবহান।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, “জাপান, চীন, রাশিয়া ও ভারত এই চার দেশের প্রভাব রয়েছে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে। যারা যত শক্তিশালী দালাল নিয়োগ করতে পারেন, তারা তত বড় প্রকল্প পাচ্ছে। জাতীয় স্বার্থে এদেশে প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে না।”

তিনি বলেন, “আমাদের দেশে এখন বড় বড় ভবন কিংবা ফ্লাইওভার দেখে উন্নয়নের ভাব আসছে। উন্নয়নের মহাসড়কে আমরা যাচ্ছি, কিন্তু তার কারণে দেশের কৃষি জমি, নদী-নালা, খাল বিল পাহাড়ের কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে, তার হিসাব যথাযথভাবে আসছে না।”

“বর্তমান সরকার এমন এক অবস্থায় রয়েছে যে কেউ সমালোচনা করলে তার কোনো রেসপন্স করে না,” বলেন তিনি।

মসিউর রহমান বিভিন্ন বক্তার প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধির বিষয়ে বলেন, “আমাদের দেশেও এখন অনেক অর্থনীতিবিদ স্বীকার করেন যে জিডিপি অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিমাপক নয়। তবে অনেকগুলোর মধ্যে একটি পরিমাপক। তবে এটি অন্যান্য পরিমাপকগুলোর চেয়ে শক্তিশালী।”

পিপিআরসি নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে রপ্তানি বাণিজ্য এবং প্রবাসী আয় দিয়ে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও এই দুই খাতের ওপর ভর করে ধনিক শ্রেণি তৈরি হচ্ছে না।

“বরং সরকারের উচ্চ ব্যয়ের প্রকল্প বাগিয়ে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় বা হাসপাতালের অনুমতি আদায়ের মাধ্যমেই বেশি লোক ধনী হচ্ছে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এদেশে রাজনৈতিকরা অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ কারণেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সবাই পায় না। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগতভাবে জনগণকে শিক্ষিত করার মাধ্যমে এ অবস্থার উত্তরণ সম্ভব।