গ্রামের মানুষের আয় বাড়াতে কৃষিতে হবে অটোমেশন: মন্ত্রী

বাংলাদেশের কৃষি খাতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি যুক্ত করে গ্রামের মানুষের আয় বাড়ানো নিয়ে সরকারের চিন্তা-ভাবনার কথা তুলে ধরলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2019, 07:06 PM
Updated : 24 April 2019, 07:06 PM

বুধবার ঢাকার গুলশানের গার্ডেনিয়া গ্র্যান্ড হলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এই ভাবনার কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, “আমাদের প্রধান অর্থনৈতিক মাধ্যম হচ্ছে কৃষি। কিন্তু কৃষি লাভজনক নয় বলে মানুষ কর দিতে পারে না। তাই কৃষি খাতকে অটোমেশনের মাধ্যমে গ্রামের মানুষের আয় বাড়িয়ে তাদের করযোগ্য করে স্থানীয় সরকারের আয় বাড়ানো সম্ভব।”

তিনি বলেন, “টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে কাউকে পেছনে না রাখার বিষয়ে বর্তমান সরকার দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

স্থানীয় সরকারকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করায় গুরুত্ব তাজুল বলেন, “না হলে আমরা লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারব না।”

নারী ক্ষমতায়নে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন,  “এখন ইউনিয়ন পরিষদে এখন তিন ওয়ার্ড মিলে যে একজন মহিলা মেম্বার নির্বাচিত করা হচ্ছে আসলে তার কোনও ওয়ার্ড না থাকলেও নারীকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে।”

অনুষ্ঠানে মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র মো. খালিদ হোসেন ইয়াদ বলেন, “প্রতি বছর প্রত্যেক জেলার ডিসিদের ঢাকায় এনে জেলা প্রশাসক সপ্তাহ করা হয়।

“কিন্তু এভাবে স্থানীয় সরকার চেয়ারম্যান উপজেলা চেয়ারম্যানদের এনে স্থানীয় সরকার সপ্তাহ করা হলে আরও বেশি কার্যকর হবে।“

তিনি বলেন,  “আমার নগরে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ পৌর কর পরিশোধ করেন। কিন্তু তাদের সেবা আমরা যথাযথ দিতে পারছি না। যেমন কেউ একটা নলকূপ স্থাপন করলে ওই পানি ঠিক আছে কি না তা আমরা সরকারের পক্ষ থেকে পরীক্ষা করে দিতে পারি না। সরকারের উচিত এগুলো পরীক্ষা করে দেয়া।“

পৌরসভার ব্যয় বাড়লেও আয় বাড়েনি উল্লেখ করে মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র বলেন, “সরকার পে-স্কেলের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করার ফলে আমার পৌরসভার বেতন ১৮ লাখ টাকা থেকে এখন ৩৫ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। কিন্তু আয় বাড়েনি।”

এরফলে অনেক পৌরসভা এখন বেতন ভাতা দিতে পারছে না, এমন কথাও বলেন তিনি।

বছরে একদিন  ‘স্থানীয় সরকার দিবস’ পালনের দাবিও তোলেন মাদারীপুর পৌরসভা মেয়র মো. খালিদ হোসেন ইয়াদ।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী উম্মে শেফা রেজবানা।

দেবপ্রিয় বলেন, “বাজেটের অর্থ স্থানীয় পর্যায়ে ব্যয়ের ক্ষেত্রে অনেক ধাপ পেরিয়ে আসতে হয়। যে বরাদ্দ দেওয়া হয় সেটি পর্যাপ্ত নয়।

“তবে স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধি যারা ক্ষমতাসীন সরকারি দলের সমর্থক তারা বিশেষ বরাদ্দ পেয়ে থাকেন। মূলত দৃশ্যমান উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ক্ষমতাসীনদের আগ্রহ বেশি থাকে।“

তিনি বলেন,  “স্থানীয় সরকারকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। এসডিজি বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকারের বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়।”

এসডিজি বাস্তবায়ন করতে প্রতিটি নগরের পরিকল্পিত উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে দেবপ্রিয় বলেন,  “আলাদা আলাদা পরিকল্পনা গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশেষ করে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে বরাদ্দ দিতে হবে।”

স্থানীয় সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কার্যকর সংযোগ থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।