কর্পোরেট করহার কমানোর সুপারিশ বেজার

বিনিয়োগ দেশে ধরে রাখতে কর্পোরেট করহার কমানোর সুপারিশ করেছেন বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2019, 02:31 PM
Updated : 15 April 2019, 02:31 PM

সোমবার এনআরবি ভবনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় এই সুপারিশ দেন তিনি।

এই সভায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম এবং বাংলাদেশ রপ্তানি অঞ্চল প্রক্রিয়াকরণ কর্তৃপক্ষের (বেপজা) সদস্য মিজানুর রহমান নিজ নিজ প্রস্তাব তুলে ধরেন।

পবন চৌধুরী বলেন, “আমরা গত কয়েক বছর ধরেই দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের প্রথম ৫ বছর পর্যন্ত কর অবকাশ দিয়ে আসছি। কিন্তু এরপরও আমাদের কিছু কোম্পানি বিদেশে চলে যাচ্ছে।

“আমি জানি, সম্প্রতি বাংলাদেশে ব্যবসা করত এরকম একটি কোম্পানি কর্পোরেট করহার বেশি হওয়ায় বিদেশে পুঁজি নিয়ে গেছে। ওই কোম্পানি এখন অন্য দেশে বিনিয়োগের সুযোগ খুজছে। ওই কোম্পানি নিশ্চয় বাংলাদেশের চেয়ে বেশি সুযোগ পাবে, ওই রকম কোনো দেশে বিনিয়োগ করবে।”

“আমাকে অনেকে অভিযোগ করেছেন আমাদের কর্পোরেট কর হার অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। তাই এনবিআরকে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য কর্পোরেট করহার যৌক্তিক পর্যায়ে সমন্বয় করতে হবে,” বলেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, এনবিআরকে শুধু রাজস্ব আহরণ নিয়ে কাজ করলেই হবে না। দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে নীতি-কৌশলও নিতে হবে।

জাপানের সুমিতমো কর্পোরেশনের আড়াই-তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে জানিয়ে পবন চৌধুরী বলেন, “তাদের দেখে অন্যরাও যেন আকৃষ্ট হয়, সেজন্য আমাদের কর্পোরেট হার অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক হতে হবে।”

এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, “কর্পোরেট কর কমালে রাজস্ব আহরণ ভারসাম্য কীভাবে ধরে রাখব? আবার কর ব্যবস্থা অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি হচ্ছে কি না, তাও দেখতে হবে। আমরা অন্যান্য দেশের কর্পোরেট করহার কত, সেটার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করব।”

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দেশের থিংক ট্যাংকরা বলেছেন, বেসরকারি খাতকে বেশি প্রটেকশন দিয়ে লাভ নেই।”

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিন বলেন, “আমরা বিনিয়োগ যে পরিমাণ চাই, তা না পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে আমাদের দক্ষ জনবল নেই।”

ভিয়েতনামের উদাহরণ দিয়ে তিনি দক্ষ জনবল তৈরিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দেন।

বেপজা‘র সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, বিদেশি বিনিয়োগের প্রথম ৫ বছর কর অবকাশের মধ্যে একটি কোম্পানির জন্য ২/৩টি করমুক্ত গাড়ি আমদানির সুযোগ ছিল। ইদানিং তা বন্ধ হয়ে গেছে। এই সুযোগ আবার খুলে দিতে হবে।

বিল্ড এর প্রধান নির্বাহী ব্যক্তি খাতে করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখের বদলে তিন লাখে উন্নীত করার প্রস্তাব দেন।

দেশে শিল্পায়নের জন্য কাঁচামাল আমদানির উপর অগ্রীম আয়কর প্রত্যাহার করে তিনি বিভিন্ন ধরনের কর অবকাশ ঘোষণার সুপারিশ করেন।

“এখন নতুন বিনিয়োগের অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হয়ে উঠেছে প্রণোদনা। এ জন্য কর অবকাশ বিশেষ চাহিদা বিনিয়োগকারীদের কাছে। কঠিন করে কর অবকাশ দিলেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনাগ্রহের সৃষ্টি হয়। তাই কর অবকাশ নীতিও সহজ করতে হবে।”