সিলেট-আখাউড়া রেললাইন ডুয়েলগেজ হচ্ছে

ষোল হাজার কোটি টাকায় সিলেট থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ২৩৯ কিলোমিটার মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2019, 02:19 PM
Updated : 9 April 2019, 02:19 PM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের আখাউড়া-সিলেট সেকশনের মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজ রেললাইনে রূপান্তর’ শীর্ষক এ প্রকল্পে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ওই বৈঠকের পর পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় ওই রেলপথের বাঁকা অংশগুলো সরল করার পাশাপাশি মিটারগেজ থেকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হবে। প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে।

“এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দ্রুত গতির রেল চলতে পারবে। তাতে সাধারণ মানুষের ভ্রমণ সময় অনেক কমে আসবে।”

মন্ত্রী জানান, এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করা হবে চীন ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে। মোট ব্যয় হবে ১৬ হাজার ১০৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

এর মধ্যে চীন সরকার ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকার এবং বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে বাকি ৫ হাজার ৪৫০ কোটি ৮ লাখ টাকার যোগান দেওয়া হবে।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত রেললাইনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। দ্রুত ডুয়েল গেজে রূপান্তর করা না হলে ঢাকা থেকে সিলেট ও চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের মধ্যে রেল চলাচল বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

ট্র্যাকের কাঠামো, পাহাড়ি এলাকার আঁকাবাঁকা রেলপথ এবং পরিচালনা জটিলতার কারণে এ পথে বর্তমানে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলতে পারে। ডুয়েল গেজে রূপান্তর করা হলে এই পথে ব্রডগেজ ট্রেনের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, মিটারগেজে হবে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার।

তাতে ঢাকা-সিলেট ও চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে ট্রেনযাত্রার সময় আড়াই ঘণ্টা কমবে। পাশাপাশি ভারতের আসামের সঙ্গে রেল যোগাযোগের সুযোগ তৈরি হবে।

২০৩৫ সাল বা তারপরেও ওই অঞ্চলে যে চাহিদা সৃষ্টি হতে পারে, তা মাথায় রেখে এ পরিকল্পনা করা হয়েছৈ বলে জানানো হয়েছে প্রকল্প প্রস্তাবে।

বর্তমানে ওই রেলপথে ১৩ জোড়া ট্রেনের মাধ্যমে সেবা দিচ্ছে রেলওয়ে বিভাগ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২৬ জোড়া ট্রেন চালানোর সুযোগ হবে।

মন্ত্রী জানান, মঙ্গলবারের বৈঠকে এ প্রকল্পটিসহ মোট সাতটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এসব প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ১৮ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৬ হাজার ৬২২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা থেকে প্রায় ১১ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা যোগান দেওয়া হবে।

অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো-

>> ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণ’ প্রকল্প; ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

>> ‘মাগুরা-শ্রীপুর জেলা মহাসড়কের বাঁক সরলীকরণসহ সম্প্রসারণ’ প্রকল্প; ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৫ কোটি টাকা।

>> ‘খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নতুন কার্যালয় ভবন এবং অডিটরিয়াম নির্মাণ’ প্রকল্প; ব্যয় হবে ১৩৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

>> ‘মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন’ প্রকল্প; ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯২০ কোটি টাকা।

>> ‘বিসিএসআইআর ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শুঁটকি মাছ প্রক্রিয়াকরণ এবং ইনডোর ফার্মিং গবেষণা সংক্রান্ত সুবিধাদি স্থাপন’ প্রকল্প; ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৯ কোটি টাকা।

>> ‘কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ঘুঘুমারী থেকে ফুলুয়ার চর ঘাট ও রাজিবপুর উপজেলা সদর (মেম্বার পাড়া) থেকে মোহনগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন হতে বাম তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্প; ব্যয় হবে ৪৭৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা।