মঙ্গলবার শেরে বাংলা নগরের এ্নইসি সম্মেলন কক্ষে আকস্মিক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এই সুদের হার নয় শতাংশে সংশোধন করা হয়েছে।
মুস্তফা কামাল বলেন, “এর আগে ৭ পার্সেন্ট ছিল, এটা এখন ফাইনালি ৯ পার্সেন্ট করা হয়েছে। ৯টা হল বেঞ্চমার্ক, এখন কেউ আপত্তি করবে না। সাত কম ছিল, এখন নয় করে দিয়েছি।”
যারা ব্যাংক থেকে ধার করে শোধ করেননি, তাদের ঋণ খেলাপি তকমা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এই সুযোগ দেওয়ার কথা ক’দিন আগেই জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী।
এই সুযোগ নিয়ে যারা ঋণ শোধ করতে না পারার ‘যৌক্তিক’ কারণ ব্যাখ্যা করতে পারবেন, তাদেরকে মোট ঋণের ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে ১২ বছরে ওই টাকা পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “যারা ভাল ঋণ গ্রহীতা, চেষ্টা করছেন দেওয়ার জন্য, তাদেরকে আমরা রিলিফ দিচ্ছি। রিলিফটি হল তারা ২পার্সেন্ট ডাউন পেমেন্ট দিয়ে আর সরল সুদে নয় পার্সেন্ট হারে এই টাকার সুদ দিতে হবে।”
সুদের হার ৯ শতাংশ হলে ব্যাংক ও ঋণগ্রহীতা উভয়ই লাভবান হবেন বলে মনে করেন মুস্তফা কামাল।
“আমি বিশ্বাস করি এবার সবাই লাভবান হবে। ব্যাংকও লাভবান হবে, ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ড যা আছে সেটাও রিকভার করতে পারবে। আর যারা টাকা দিচ্ছেন, টাকা তারও সুন্দরভাবে দিতে পারবে।”
পুঁজিবাজারে ‘খেলোয়াড়রা সুশিক্ষিত নয়’
অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল পুঁজিবাজার শক্তিশালী করতে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ার আশ্বাসও দেন।
তিনি বলেন, “দেশের পুঁজিবাজার শক্তিশালী না হওয়ার কারণ আমার পুরোপুরি জানা নেই। হতে পারে যে কাজগুলো করার দরকার, তা আমরা করতে পারছি না; হতে পারে দেশের বাজারের খেলোয়াড়রা সুশিক্ষিত নন।”
পুঁজিবাজারকে আর্থিক ও রাজস্ব দুই ধরনেরই সহায়তার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, “পুঁজিবাজারের সঙ্গে প্রতি মাসে একবার বৈঠক করা হবে। ইউনিভার্সিটির মতো ক্লাস হবে।”
অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব পুঁজিবাজার বিষয়ক এই ক্লাস নেবেন বলে জানান তিনি।
পুঁজিবাজার শক্তিশালী করতে সরকারি কোম্পানিগুলোর শেয়ার ছাড়ার কথা বলেন মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, “অর্থনৈতিক মৌলভিত্তি শক্তিশালী হলে বাজারও শক্তিশালী হবে, যদিও এখনকার বাজার স্থিতিশীল আছে। হই চই হচ্ছে না।”
বাজেটের আকার বাড়বে, করহার ‘বাড়বে না’
আগামী অর্থবছরের বাজেট এবারের চেয়ে ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকা বেশি হবে বলে আভাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
প্রথম বারের মতো জাতীয় বাজেট দিতে যাওয়া মুস্তফা কামাল এই অর্থ জোগানে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর উপর জোর দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, “রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে হবে, কারণ, চাহিদা বেশি। এনবিআর ও নন-এনবিআর মিলিয়ে কত আদায় হয় দেখব।”
তবে কর না বাড়ানোর আশ্বাস দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এক টাকাও কর বাড়ানো হবে না। তবে করের আওতা বাড়িয়ে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো হবে। করের আওতা বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। সে সুযোগগুলো আমরা কাজে লাগাব।”
তিনি আরও বলেন, “আগামী বাজেটে একটা স্বচ্ছ নীতি উপহার দেওয়া হবে, যাতে বিদেশিরাও জানতে পারেন আমাদের আইন–কানুনগুলো কী কী।”