সোনা আমদানি: লাইসেন্স পেতে আবেদন শুরু

সোনা আমদানির জন্য লাইসেন্স পাওয়ার আবেদনপত্র বিতরণ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2019, 03:23 PM
Updated : 23 March 2019, 03:23 PM

১৯ মার্চ থেকে আবেদনপত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে দিতে হবে অফেরতযোগ্য ৫ লাখ টাকার পে-অর্ডারসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র।

আগ্রহীদের অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়  ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগে আবেদন করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা যে স্বর্ণ নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে তা অনুসরণ করেই আবেদনপত্র বিতরণ করা হচ্ছে। ৩০ সেপ্টেম্বর পর‌্যন্ত আবেদন করা যাবে।

বেসরকারি গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে বার্ষিক ১৮-৩৬ মেট্রিক টন সোনার চাহিদা থাকলেও আমদানির সুযোগ না থাকায় চোরাচালানের মাধ্যমেই চাহিদার অনেকটা পূরণ হচ্ছিল।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সোনা চোরাচালান বেড়ে যায়। গত চার বছরে দেড় হাজার কেজির বেশি চোরাই সোনা উদ্ধার করা হয়।

বৈধ পথে আমদানি না হওয়ায় স্বর্ণখাতে সরকার যেমন বছরে হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছিল; তেমনি ব্যবসায়ীরাও সোনা আমদানির সুযোগ চাইছিলেন।

এই প্রেক্ষাপটে স্বর্ণ নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার।

গত বছরের ৩ অক্টোবর চোরাচালান বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত ডিলারদের মাধ্যমে সোনা আমদানির বিধান রেখে স্বর্ণ নীতিমালা অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

এর পর থেকেই ডিলার নিয়োগের জন্য তোড়জোড় শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সোনা আমদানির লাইসেন্স পেতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে তাতে, অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের ক্ষেত্রে দিতে হবে আবেদনপত্রের সঙ্গে অনুমোদিত ডিলারের লাইসেন্সের কপি, ব্যাংক লাইসেন্সের কপি, স্বর্ণ ক্রয়, সংরক্ষণ ও বিতরণ আদেশ-১৯৮৭ এর  আওতায় লাইসেন্সের কপি, অফিসের মালিকানা বা ভাড়ার চুক্তিনামার কপি, আবেদনকারী অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞ জনবল, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার সংক্রান্ত বিবরণীর উপযুক্ত প্রমাণাদি। দিতে হবে অফেরতযোগ্য ৫ লাখ টাকার পে-অর্ডার।

 অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের আবেদনের সঙ্গে হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্সের কপি, কর শনাক্তকরণ নম্বরের (টিআইএন) সনদপত্র, মূল্য সংযোজন করের (মূসক) নিবন্ধন, ব্যবসা শনাক্তকরণ নম্বরের (বিআইএন) সনদপত্র, স্বর্ণ ক্রয়, সংরক্ষণ ও বিতরণ আদেশ ১৯৮৭ আওতায় লাইসেন্সের কপি, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যপদের কপি, আয়কর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সর্বশেষ নিরূপিত আয়ের সার্টিফিকেট-আয়কর নির্ধারণী আদেশের কপি জমা দিতে হবে।

এছাড়া আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছলতা সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের তফসিলভুক্ত ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সনদপত্র, আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক-অংশীদার-পরিচালকদের বিস্তারিত তথ্যসহ উপযুক্ততা ও যথার্থতা সম্পর্কে পুলিশ ছাড়পত্র, আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তফশিলভুক্ত ব্যাংকের গোপন প্রতিবেদন, আয়কর পরিশোধ প্রত্যয়নপত্র এবং ঋণ প্রতিবেদন (সিআইবি রিপোর্ট) দিতে হবে।

একইসঙ্গে  আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ছবিসহ জীবন বৃত্তান্ত, আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত লিমিটেড কোম্পানি হলে উক্ত কোম্পানির নিবন্ধন সনদ, মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন এবং আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশনের কপি এবং অফিস স্থানের মালিকানা দলিল বা ভাড়া করা অফিস হলে চুক্তিনামার কপি জমা দিতে হবে।

এক্ষেত্রেও  লাইসেন্স ফি ৫ লাখ টাকার অফেরতযোগ্য পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফট জমা দিতে হবে।

লাইসেন্সের মেয়াদকাল ইস্যুর তারিখ হবে দুই বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে ডিলার ব্যাংককে ২ লাখ টাকা নবায়ন ফি (অফেরতযোগ্য) দিয়ে নবায়ন করতে পারবেন।

(ফাইল ছবি)

লাইসেন্স কোনো অবস্থাতেই হস্তান্তর করা যাবে না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে অন্যান্য বিধিবিধান পরিপালন সাপেক্ষে লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান তার ব্যবসায়িক স্থান পরিবর্তন করতে পারবে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণবার ও স্বর্ণালঙ্কার আমদানি করার জন্য আবশ্যিকভাবে আমদানি নীতি আদেশ ও অন্যান্য আমদানি বিষয়ক আইন/বিধি পরিপালন করতে হবে।

 লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক স্বর্ণ ব্যবসার জন্য প্রস্তাবিত কার্যস্থলে অন্য কোনো ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না।

বেসরকারি গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে বার্ষিক ১৮-৩৬ মেট্রিক টন সোনার চাহিদা থাকলেও আমদানির সুযোগ না থাকায় চোরাচালানের মাধ্যমেই চাহিদার অনেকটা পূরণ হচ্ছিল।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সোনা চোরাচালান বেড়ে যায়। গত চার বছরে দেড় হাজার কেজির বেশি চোরাই সোনা উদ্ধার করা হয়।

বৈধ পথে আমদানি না হওয়ায় স্বর্ণখাতে সরকার যেমন বছরে হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছিল; তেমনি ব্যবসায়ীরাও সোনা আমদানির সুযোগ চাইছিলেন।

এই প্রেক্ষাপটে স্বর্ণ নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার।