ব্যাংকগুলোর অন্দরের খোঁজ নিতে সরকারের উদ্যোগ

বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর কোনটি কী অবস্থায় রয়েছে, তা জানার জন্য একটা ‘বিশেষ নিরীক্ষা’ চালাতে যাচ্ছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2019, 05:23 PM
Updated : 18 March 2019, 05:23 PM

ব্যাংক খাত নিয়ে সমালোচনার মধ্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সোমবার সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এতথ্য জানান।

তিনি জানান, “ব্যাংকগুলোর ব্যালান্স শিটে যা আছে, তা সত্যিকারভাবে আছে কি না, তা জানার জন্য আমরা একটা স্পেশাল অডিটের ব্যবস্থা করেছি।”

আওয়ামী লীগের গত ১০ বছরের শাসনকালে অর্থনীতির সূচকগুলো ঊর্ধ্বমুখী হলেও ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি নিয়ে সমালোচনা শুনতে হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ব্যাংক থেকে যারা ঋণ নিয়েছেন তাদের মধ্যে কারা ভালো ব্যবসায়ী আর কারা অসাধু ব্যবসায়ী, তা বের বের করা হবে। এরমধ্যে যারা ভালো ব্যবসায়ী, তাদেরকে আমরা সাহায্য করব।

“আর অসাধু যারা আছে, যারা ব্যাংক থেকে টাকা নেয় না দেওয়ার জন্য, তাদের সাথে আমরা কোনো রকম কম্প্রোমাইজ করব না।”

দেশের ব্যাংক খাতে ‘সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতি’র কথা স্বীকার করে মুস্তফা কামাল বলেন, “এটা এই নয় যে গত ৫/৭ বছর ধরে হচ্ছে। এ বিচ্যুতি বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় আসছে, এখন আমাদের হাত দেওয়া উচিত।

“এগুলো ক্লিন করে আমাদের পরিকল্পনা নির্ধারণ করব। কিন্তু ৫০ বছরের বা ২৫ বছরের পুরাতন ফিগার দিয়ে পরিকল্পনা নির্ধারণ করতে পারব না।”

এই প্রসঙ্গে বিশেষ নিরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের মূল উদ্দেশ্যটি হচ্ছে আমাদের সরকারি-বেসরকারি উভয় খাতে ব্যাংকে কী পরিমাণ সম্পদ আছে, সেটার হালনাগাদ তথ্য আমাদের জানা দরকার।”

মন্ত্রী বলেন, “ব্যাংকগুলোর যতটা খারাপ অবস্থা আমরা শুনি, আসলে ততটা খারাপ নয়। অতটাই যদি খারাপ হত, তাহলে ধারাবাহিকভাবে এত প্রবৃদ্ধি কেমন করে করছি আমরা?

“এখন আমাদের কাজ হবে ভালো ব্যাংককে সাহায্য করা আর খারাপ ব্যাংককের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করা। তবে আমরা কাউকে জেলে পাঠিয়ে শাস্তি দিতে চাই না। আমরা চাই ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করুক।”

অর্থমন্ত্রী খেলাপিদের উপর আবার চক্রবৃদ্ধি হার সুদ আরোপের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “পৃথিবীর কোনো দেশে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ কাউন্ট করা হয় না। কিন্তু আমাদের হয়। তাই আমাদেরও সরল সুদে নিয়ে আসতে হবে। আমরা আগামীতে চিন্তাভাবনা করব ব্যাংকগুলোকে সরল সুদে কিভাবে আনা যায়।”

শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত, শিল্প ও বিনিয়োগ উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীরও ছিলেন।