বাংলাদেশের আর্থিক খাত সঠিক পথে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও শক্তিশালী ও সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
সোমবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত ১৮তম নূরুল মতিন মেমোরিয়াল লেকচার ‘ইথিকস ইন ব্যাংকিং’ বিষয়ে বক্তব্য দেন জুনায়েদ কামাল।
তিনি বলেন, “ব্যাংকের গভর্নিং বোর্ড, ম্যানেজমেন্ট এবং সকল কর্মীদের কর্পোরেট গভর্নেন্স বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক আরও শক্তিশালী করতে হবে, যাতে কর্পোরেট গভর্নেন্স বাস্তবায়নে কোনো ধরনের গাফিলতি না থাকে।”
বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের চিফ অব স্টাফ হিসেবে কাজ করে আসা জুনায়েদ কামাল বলেন, “ব্যাংকাররা সাধারণ মানুষের সম্পদ আমানত রাখেন। ওই আমানতের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সেলফ রেগুলেটর হওয়া উচিত। দেশের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ এ খাতকে নিরাপদ রাখতে রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক শক্তিশালী করতে হবে।”
“দেশের আর্থিক খাত ঠিক রাখতে কর্পোরেট ও পেশাজীবিদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের শক্তিশালী নৈতিকতা দিয়ে এ খাতকে সামলাতে হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংককে শক্তিশালী করার মাধ্যমে নজরদারি আরো বাড়াতে না পারলে কর্পোরেট গভর্নেন্স ব্যর্থ হবে বলে সতর্ক করেন জুনায়েদ কামাল আহমাদ।
এ ক্ষেত্রে সুশীল সমাজেরও ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
“আর্থিক ব্যবস্থায় অতিরিক্ত নজরদারি হিসেবে সুশীল সমাজকে কাজ করতে হবে। সুশীল সমাজের এ নজরদারি ব্যাংকিং ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় চেক অ্যান্ড ব্যালান্স স্থাপনে সহায়ক হবে।”
জুনায়েদ কামাল আহমাদ জন্মগতভাবে বাংলাদেশি। যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক করার পর হার্ভার্ড থেকে লোক প্রশাসনে স্নাতকোত্তর করেন। পরে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে অ্যাপ্লাইড ইকোনমিকসে পিএইচডি করেন তিনি।
বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে ভারতে আসার আগে দীর্ঘদিন সংস্থাটির বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন জুনায়েদ কামাল আহমাদ। ১৯৯১ সালে ইয়াং প্রফেশনাল হিসেবে বিশ্ব ব্যাংকে যোগ দেন তিনি।
বিশ্ব ব্যাংকের হয়ে আফ্রিকা ও পূর্ব ইউরোপে কাজ করেছেন জুনায়েদ কামাল। ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের পরিচালক ছিলেন তিনি। পরে বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়াং কিমের চিফ অব স্টাফের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।