বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বুধবার সকালে মুদ্রানীতি ঘোষণার অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমাদের একটি প্রতিনিধি দল এখন নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছে।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ছাড়াও চার সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটের মহাব্যবস্থাপক দেবপ্রসাদ দেবনাথ, একই ইউনিটের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রব এবং অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক জাকির হোসেন রয়েছেন।
গভর্নর বলেন,যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত আনার পাশাপাশি দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করা এই মামলার উদ্দেশ্য।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (নিউ ইয়র্ক ফেড) থাকা বাংলাদেশের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং লেনদেনের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সুইফটে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে এই অর্থ ফিলিপিন্স ও শ্রীলঙ্কার দুটি ব্যাংকে সরানো হয়েছিল।
পাঁচটি সুইফট বার্তার মাধ্যমে চুরি হওয়া এ অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২ কোটি ডলার আটকানো যায় এবং তা ফেরতও পাওয়া যায়।
তবে ফিলিপিন্সে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার জুয়ার টেবিল ঘুরে হাতবদল হয়। পরে ওই অর্থের দেড় কোটি ডলার জুয়ার আসর থেকে ফিলিপিন্স সরকার তুলে ফেরত দিলেও বাকি অর্থ পাওয়া যায়নি।
গভর্নর বলেন,‘রিজর্ভ চুরির ঘটনা থেকে যারা লাভবান হয়েছে এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল’, তাদের এ মামলায় আসামি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির এই ঘটনা ফিলিপিন্সেও সাড়া ফেলেছিল। তারাও ঘটনার তদন্ত করে একটি মামলা করে।
যে ব্যাংকের মাধ্যমে এই অর্থ জুয়ার টেবিলে গিয়েছিল, সেই আরসিবিসির কর্মকর্তা মায়া সান্তোস দেগিতোকে সম্প্রতি দোষী সাব্যস্ত করেছে দেশটির আদালত।
ওই ঘটনায় বাংলাদেশেও একটি মামলা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা ওই মামলায় সরাসরি কাউকে আসামি করা হয়নি। তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ গত তিন বছরেও আদালতে প্রতিবেদন দিতে পারেনি।