বাংলাদেশে অবকাঠামো নির্মাণ বাড়বে: এআইআইবি

বাড়তি নির্মাণ খরচ সত্ত্বেও বাংলাদেশে অবকাঠামো নির্মাণ বাড়বে বলে মনে করছে চীনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এশিয়ান অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক-এআইআইবি।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2019, 05:47 PM
Updated : 29 Jan 2019, 05:47 PM

সংস্থাটি বলেছে, মুল্যস্ফীতি এবং সম্ভাব্য মুদ্রার মান হ্রাস নিয়ে অবকাঠামো খাতের অংশীদারদের উদ্বেগ সত্ত্বেও এআইআইবি বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে অগ্রাধিকার দিয়ে যাবে।

এআইআইবির এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ২০১৯ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে এমন ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ, চীন, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকাসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, বর্তমান বাজার অনিশ্চয়তা এবং স্বল্পমেয়াদী চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশসহ এশিয়াজুড়ে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে আগামী ১২ মাসে প্রতিযোগিতামূলক দেশীয় অর্থায়ন পরিবেশের কারণে অবকাঠামোগত ঋণ ব্যয় হ্রাস পাবে।

“দীর্ঘমেয়াদী ঋণগ্রহীতাদের বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আর্থিক খাত শক্তিশালী হওয়ায় ঋণ প্রদানের হার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”  

“মুদ্রা অস্থিতিশীলতায় প্রকল্প অর্থায়ন প্রভাবিত হতে পারে, যদিও বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংকগুলো যেকোনো প্রতিবন্ধক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।”

এআইআইবি এর পলিসি অ্যান্ড স্ট্রাটেজি ভাইস প্রেসিডেন্ট জোয়াচিম ভন আমসবার্গ বলেন, “বাংলাদেশ একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ। বিদ্যমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন ধারায় অবকাঠামো খাতের ব্যাপক সম্প্রসারণের এখনই সুযোগ।”

“আমরা আর্থিকভাবে ফলপ্রসু এবং উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রভাব রাখতে সক্ষম অবকাঠামোগত প্রকল্প চিহ্নিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য অংশীদারদের সাথে কাজ করার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারবদ্ধ।”

এআইআইবি বর্তমানে পরিবহন, জ্বালানী, এবং পানি উন্নয়ন খাতে বেশ কয়েকটি প্রকল্প পর্যলোচনা করছে। এ প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ময়মনসিংহ কেওয়াটখালি ব্রীজ প্রকল্প এবং সিলেট-তামাবিল সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প।

এআইআইবি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের তিনটি প্রকল্পে ২৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার অনুমোদন করেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার ক্রমবর্ধমান চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রাখতে বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অবকাঠামোগত প্রকল্প বাস্তবায়নে বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।

“সদস্যদের অবকাঠামোগত উন্নয়নে স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়তার জন্য এআইআইবি কৌশল প্রণয়ন করছে।”

এআইআইবির প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জ্যাং পিং থিয়া বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে। নির্মাণ ব্যয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে উন্নতি বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকে ত্বরান্বিত করবে।”

এআইআইবির সদর দপ্তর চীনের বেইজিংয়ে। ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করা ব্যাংকটির বিশ্বব্যাপী বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৯৩।

এশিয়া অঞ্চলের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের উদ্দেশ্যে কাজ করছে ব্যাংকটি। এছাড়াও এই অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান তৈরি একটা বড় লক্ষ্য সংস্থাটির।