২০১৯ সালে এসে রেলপথ মন্ত্রণালয় ব্যয় প্রায় ৩৭ শতাংশ বা ৭১৩ কোটি টাকা বাড়ানোর পাশাপাশি মেয়াদও সাত বছর মেয়াদ বাড়িয়ে প্রকল্প সংশোধনের প্রস্তাব পাঠিয়েছে একনেকে।
মঙ্গলবার একনেক সভায় প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোফাজ্জল হোসেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় বলেন, “অর্থায়ন সঙ্কট ও দরপত্র নিয়ে জটিলতার কারণে প্রকল্পটি মেয়াদের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
“প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শুরুর দিকে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেও কোনো দরপত্র না পাওয়ায় লোকোমোটিভ সংগ্রহে বিলম্বের শুরু হয়।”
কয়েক দফা দরপত্র ডাকার পর দক্ষিণ কোরিয়ার হিয়ন্দের দরপ্রস্তাব পাওয়া গেলেও ওই কোম্পানি লোকোমোটিভ সরবরাহে বেশি অর্থ চাওয়ায় প্রকল্পটি সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে, বলেন রেল সচিব।
একনেকের জন্য তৈরি প্রকল্প প্রস্তাবে দেখা যায়, ৭০টি লোকোমোটিভ বা ইঞ্জিন কেনার জন্য ২০১১ সালে অনুমোদিত এ প্রকল্প ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল।
অনুমোদনকালে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা। ওই প্রস্তাবে ইঞ্জিনগুলো বিডার্স ফাইন্যান্স বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ঋণের ব্যবস্থা করবে এই পদ্ধতিতে কেনার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল, যে ঋণ পরে সুদসহ সরকারের পরিশোধ করার কথা।
এরপর চূড়ান্ত অনুমোদনের পর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবার আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। সময়সীমা আট বার বাড়ানোর পর তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে।
কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান শর্তপূরণে ব্যর্থ হলে একই বছরের ৪ জুলাই দ্বিতীয়বার দরপত্র আহ্বান করা হয়। এসময় তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নিলেও প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়।
এরপর ২০১৪ সালে তৃতীয়বার দরপত্র আহ্বানে মুল্যায়ন কমিটি যাচাই-বাচাই করে ৫টি দরপত্রের মধ্যে মেসার্স ভসলো স্পানা এসএ এবং মেসার্স হিয়ন্দে রটেমকে কারিগরিভাবে গ্রহণযোগ্য বলে সায় দেয়।
এর মধ্যে ভসলো স্পানা কোম্পানির নাম পরিবর্তনজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ায় হিয়ন্দের দরপ্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ওই কোম্পানির দরপ্রস্তাব প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে বেশি হওয়ার প্রকল্পটি সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি সভায় প্রকল্পটির ব্যয় প্রায় ৭১৩ কোটি টাকা বাড়িয়ে প্রায় ২ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকায় উন্নীত করায় সায় দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।
এই প্রকল্পের ব্যয়ের মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৬১১ কোটি ২০ লাখ টাকার যোগান হবে; সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাকি ২ হাজার ৪৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা দেবে।