যাত্রাবাড়ী-ডেমরা সড়ক চার লেইনের হচ্ছে

গাড়ি চলাচল বেড়ে যাওয়ায় ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে ডেমরার সুলতানা কামাল সেতু পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়ক চার লেইনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2019, 01:20 PM
Updated : 22 Jan 2019, 01:57 PM

এজন্য প্রায় ৩৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্প মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে নতুন সরকারের প্রথম একনেক সভায় এটিসহ আটটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয় বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

বৈঠকে শেখ হাসিনা দেশের সব শিল্প কারখানায় বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি) স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আগামীতে ইটিপি ছাড়া কোনো শিল্প অনুমোদন দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।”

যাত্রাবাড়ী-ডেমরা সড়কটি এক সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম চলাচলের পথ ছিল; যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড হয়ে মহাসড়ক হলে এটিই হয় প্রধান মহাসড়ক, যা চার লেইনে উন্নীত হয়েছে।

সিলেটগামী গাড়িগুলো এখনও দুই লেইনের যাত্রাবাড়ী-ডেমরা সড়কটি ব্যবহার করছে। পাশাপাশি ওই এলাকাটি আগের চেয়ে জনবহুল হওয়ায় চলাচলকারী গাড়ির সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “দেশের পূর্বাঞ্চল ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের সকল যানবাহন যাত্রাবাড়ী-কাচপুর অংশে এসে মিলিত হয়। কিন্তু কাচপুর সেতু ও পোল্ডার সড়ক নির্মাণের ফলে ডেমরা সড়কে যান চলাচলের চাপ বেড়ে গেছে।

“এ সড়কে যানবাহনের চাপে নিয়মিত যানজট সৃষ্টি হয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করছে। এ পরিস্থিতিতে এ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।”

প্রকল্প প্রস্তাবে নায় বলা হয়েছে “মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলের কারণে যাত্রাবাড়ী-ডেমরা সড়কাংশে যান চলাচল অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু সংখ্যক বাণিজ্যিক শিল্প প্রতিষ্ঠান আশেপাশে গড়ে উঠেছে।”

সড়কটি ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থ থেকে ১৫ দশমিক ৬০ মিটার প্রস্থের করে চার লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সড়কটিতে চার লেইনের পাশাপাশি ধীরগতির যান চলাচলের জন্য উভয় পাশে সার্ভিস লেইনও হবে।

ডেমরামুখী এই সড়কটি চার লেইনের হবে

বৈঠকে যে আটটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, তার ব্যয় এক হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা। এর পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে।

মন্ত্রী জানান, সাতটি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের উন্নয়ন এবং নতুন ছয়টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট স্থাপনে একটি প্রকল্পও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সভায়।

বর্তমানে দেশে ৪২টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট রয়েছে। নতুন আরও ৬টি হবে নওগাঁর পত্নীতলায়, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়, নোয়াখালীর কবিরহাটে, জামালপুর সদনে, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে এবং মুন্সিগঞ্জ সদরে।

ময়মনসিংহের গফরগাঁও ও গৌরীপুর, জামালপুরের বকশীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, বরগুনা ও লক্ষ্মীপুরের ইনস্টিটিউটগুলোর মান উন্নয়ন করা হবে।

মান্নান বলেন, “বস্ত্র ও পাট শিল্প খাতের ফ্লোর পর্যায়ে বস্ত্র প্রযুক্তিবিদ তৈরির উদ্দেশ্যে এ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।”

এই প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ৩৫৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ২০২১ সাল নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।

অন্য প্রকল্পগুলো

>> ‘পিপিআর রোগ নির্মূল এবং ক্ষুরারোগ নিয়ন্ত্রণ’ প্রকল্প; ব্যয় ৩৪৫ কোটি টাকা।

>> ‘দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ‘পুষ্টি সমৃদ্ধ উচ্চ মূল্যের অপ্রধান শস্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ কর্মসূচি’ প্রকল্প; ব্যয় হবে ২০৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

>> ‘বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের জাদুঘর ভবন সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ’ প্রকল্প; ব্যয় ১৪৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

>> ‘গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী সম্প্রসারণ (৩য় সংশোধন)’ প্রকল্প। ব্যয় প্রায় ১০৩ কোটি টাকা।

>> ‘নেত্রকোনা জেলার চল্লিশা (বাগড়া)-কুনিয়া-মেদনী-রাজুবাজার সংযোগ মহাসড়ক নির্মাণ’ প্রকল্প। ব্যয় ২৫৭ কোটি ২১ রাখ টাকা।

>> ‘গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারাবাজার (জেড-২৮০২) সড়কে বিদ্যমান ৯টি সরু ও জরাজীর্ণ সেতুর স্থলে ৯টি আরসিসি/পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প। ব্যয় প্রায় ১১২ কোটি টাকা।