১৮ দিনেই ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স

গত বছরের ধারাবাহিকতায় প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাহে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে।

আবদুর রহিম হারমাছিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2019, 05:36 PM
Updated : 20 Jan 2019, 05:36 PM

নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি শেষ হতে এখনও প্রায় অর্ধেক বাকি; এরই মধ্যে রেমিটেন্সের অংক ১০০ কোটি (১ বিলিয়ন) ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক রেমিটেন্স সুখবর দিয়ে শেষ হয়েছিল ২০১৮ সাল। গত বছরে এক হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ (১৫.৫৪ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা।

যা ছিল ২০১৭ সালের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি।

তারই ধারাবাহিকতায় চলতি জানুয়ারি মাসের ১৮ দিনে (১ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি) ১০০ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

রেমিটেন্স বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশী মুদ্রার সঞ্চয়নও (রিজার্ভ) সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। রোববার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, গত ৮ জানুয়ারি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের ১১৪ কোটি ৮০ লাখ (১.১৫ বিলিয়ন) ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পরও রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করছে মূলত: রেমিটেন্স বৃদ্ধির কারণে।

সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মী, প্রবাসী এই কর্মীদের পাঠানো অর্থ সচল রাখছে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা

রেমিটেন্স আরও বাড়াতে মার্কিন ডলার-টাকার বিনিময় হার ৮৫ টাকা করার পরামর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।

তিনি বলেন, ভারত, চীন, ভিয়েতনামসহ অনেক দেশ মার্কিন ডলারের বিপরীতে তাদের মুদ্রার ব্যাপক অবমূল্যায়ন করেছে। বাংলাদেশেও হয়েছে; তবে এ দেশগুলোর তুলনায় খুবই কম।

তথ্য দিয়ে এই গবেষক বলেন, গত ছয় মাসে ভারতীয় মুদ্রা রূপির বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি। সে তুলনায় বাংলাদেশী মুদ্রা টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে দশমিক ১৮ শতাংশ মাত্র।

“রপ্তানি আয় এবং প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বাড়াতে খুব শিগগিরই ডলালের দর ৮৫ টাকায় ‘স্থির’ করে দেয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর‌্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৭৪৯ কোটি ১৩ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে বাংলাদেশে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি।

২০১৮ সালের শেষ দুই মাস নভেম্বর ও ডিসেম্বরে রেমিটেন্স এসছে যথাক্রমে ১১৮ কোটি ও ১২০ কোটি ২৮ লাখ ডলার।

২০১৭ সালে বাংলাদেশে এসেছিল এক হাজার ৩৫৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার রেমিটেন্স।

এ হিসাবে ২০১৮ সালে আগের বছরের চেয়ে ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ রেমিটেন্স বেশি এসেছে।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি রেমিটেন্সের নিম্নগতি সরকারের নীতি-নির্ধারকদের কপালে ভাঁজ ফেলেছিল।

স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে গত অর্থবছর রেমিটেন্স বাড়ে। খরা কাটিয়ে বাংলাদেশ ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষ করে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে।

বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাদের পাঠানো অর্থ বাংলাদেশে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। বাংলাদেশের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মত।