ভারতে নীতি সংশোধন, তৃতীয় দেশের বিদ্যুৎ আসবে সরাসরি

ভারতীয় নীতিমালার একটি ধারা সংশোধন করায় দেশটির ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি-রপ্তানির প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় সরাসরি লাভবান হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

রিয়াজুল বাশারবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2018, 09:40 AM
Updated : 25 Dec 2018, 10:05 AM

বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। ভারতের নীতিমালা সংশোধন হওয়ায় এই বিদ্যুৎ আমদানি এখন ‘সময়ের ব্যাপার’ বলছে সরকার।

আগে ভারতের মধ্য দিয়ে তৃতীয় কোনো দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে হলে ভারতের কোনো কোম্পানি বা সংস্থার মাধ্যমে আনতে হত। নীতিমালা সংশোধনের ফলে এখন সরাসরি নেপাল বা ভুটান থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারবে। এ প্রক্রিয়ায় শুধু সঞ্চালন লাইন ব্যবহারের জন্য ভারতের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে।

বিদ্যুৎ সচিব আহমদ কায়কাউস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভারতের এই উদ্যোগে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় গতি পাবে।”

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনজি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারত, বিদ্যুৎ আমদানি-রপ্তানি (ক্রস র্বডার) নির্দেশেকা-২০১৮ গত ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশ করছে। নতুন এ  নির্দেশিকা অনুমোদিত হওয়ায় বাংলাদেশ ভারত হয়ে প্রতিবেশী দেশসমূহ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারবে।

“ভারতের ‘ক্রস বর্ডার ট্রেড অব ইলেকট্রিসিটি’র নির্দেশিকায় ছিল, ভারত ও প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে যে কোন ক্রস বর্ডার লেনদেনে ভারতীয় সত্তা/সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট দেশের কোন সত্তা/সংস্থার সাথে দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে অনুমোদিত হবে, যা দেশগুলোর মধ্যে সামগ্রিক কাঠামোর অধীনে চুক্তি দ্বারা স্বাক্ষরিত।”

কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত সংশোধিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দুটি আলাদা দেশ নিজেদের মধ্যেও বিদ্যুৎ কেনাবেচা করতে পারবে যেখানে ভারত ত্রিপাক্ষিক চুক্তি দ্বারা তাতে অংশগ্রহণ বা অনুমোদন করবে।

“আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামোর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য বাংলাদশ ও ভারতের মধ্যে গঠিত জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির সভায় নেপাল বা ভুটান (বা প্রতিবেশী দেশ ) থেকে ভারত হয়ে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয় বারবার আলোচনা করা হয়। আলোচনার প্রেক্ষিতে প্রণীত ভারতের নতুন এ নির্দেশকা পাশ্বর্বতী দেশ হতে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানির পথ প্রশস্ত  করবে,” বলা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে।

ইতোমধ্যে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে নেপালের সাথে সমঝোতা চুক্তি সই করেছে বাংলাদশ।

গত অগাস্টে কাঠমান্ডুতে ওই সমঝোতা সইয়ের পর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “আমরা অল্প পয়সায় বিদ্যুৎ পাব। আগামী ১০ বছরের মধ্যে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে।”

মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রথম জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের ও জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির সভা কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমান প্রেক্ষিতে ভারত হয়ে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।”

এছাড়াও নীতিমালা সংশোধন করায় ভারতের বাজার থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ কেনার সুবিধাও সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আহমদ কায়কাউস।

তিনি বলেন, “আগে ভারতে থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে হত দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায়। নীতিমালা সংশোধনের ফলে তাদের বাজার থেকে দৈনন্দিন ভিত্তিতেও এখন বিদ্যুৎ কেনার সুযোগ তৈরি হয়েছে।”