বৈষম্য কীভাবে কমবে, ইশতেহারে উত্তর পাননি বিনায়ক সেন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে অর্থনৈতিক বৈষম্য কমানোর সুস্পষ্ট কোনো পরিকল্পনা না দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ বিনায়ক সেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2018, 06:30 AM
Updated : 22 Dec 2018, 07:05 AM

সরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের এই গবেষণা পরিচালক বলছেন, বৈষম্য দূর করার উপায় বা পদ্ধতি নিয়ে ইশতেহারে বিস্তারিত থাকা উচিত ছিল।

শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর সভাকক্ষে সমাজ গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে ‘রাজনৈতিক ইশতেহারে অর্থনৈতিক ইস্যুর প্রতিফলন’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিনায়ক সেন।

তিনি বলেন, প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে আয়-সম্পদ ও শিক্ষার ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য নিয়ে তেমন কথা নেই৷ দুই-এক লাইন থাকলেও তাতে বোঝার উপায় নেই দেশের বৈষম্য কীভাবে দূর হবে।

বিনায়ক সেন বলেন, “আওয়ামী লীগের ইশতেহার উন্নয়নের কাহিনীতে আটকে গেছে৷ তাদের ইশতেহারের প্রধান মনোযোগ উন্নয়ন।

“আবার বিএনপির ইশতেহারে গণতন্ত্রকে প্রতিদিনের অনুশীলনে পরিণত করার কথা বলা হলেও তাদের মূল ফোকাস রাজনৈতিক।”

বিনায়ক সেন মনে করেন, মধ্যবিত্তের ভূমিকার উপর গুরুত্ব দেওয়াও উচিৎ ছিল ইশতেহারে।

তিনি বলেন, “দুই দলের ইশতেহারে কিছু মৌলিক প্রশ্নের উত্তরও আসেনি৷ সংবিধানের চার মূলনীতির আজ কী অবস্থা, আমরা কী ধরনের রাষ্ট্র চাই, এসব প্রশ্ন আলোচিত হয়নি।”

বিএনপির ইশতেহারে ক্ষমতায় গেলে পুনরায় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির যে কথা বলা হয়েছে, তা নতুন করে বিভাজন সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক নজরুল ইসলামের ‘নির্বাচন পদ্ধতি’ শীর্ষক আরও একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। নজরুল ইসলামের পক্ষে এটি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ৷

অধ্যাপক নজরুল সংসদে আসন বণ্টনে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি প্রবর্তনের সুপারিশ জানিয়ে বলেন, এতে কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করার বিষয়গত সুযোগ কমবে এবং অধিকতর যোগ্যতম ব্যক্তিদের সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে ব্যক্তির পরিবর্তে দলকে ভোট দেবেন ভোটাররা, প্রাপ্ত ভোটের হারের ভিত্তিতে সংসদে দলগুলোর আসন সংখ্যা নির্ধারিত হবে।