আয়কর দেওয়া ‘অভ্যাসে পরিণত করতে হবে’

দেশের উন্নতির জন্য আয়কর দেওয়াকে চাপ হিসেবে না নিয়ে অভ্যাসে পরিণত করার তাগিদ এসেছে আয়কর দিবসের অনুষ্ঠান থেকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2018, 07:20 AM
Updated : 30 Nov 2018, 07:22 AM

শুক্রবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে এই তাগিদ দেন সংস্কৃতি অঙ্গনের তারকারা।

চলচ্চিত্র তারকা গুলশান আরা আক্তার চম্পা বলেন, “কর দেওয়া এখন আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। দেশের প্রতিটির মানুষ, যাদের কর দিতে হবে, তাদেরকে কর দেওয়ার অভ্যাস করে গড়ে তুলতে হবে।”

চলচ্চিত্র তারকা ফেরদৌস বলেন, “কর প্রদানে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষত তরুণদের। সবাইকে কর প্রদানের বিষয়ে সচেতন করতে হবে। সবাইকে কর প্রদানের মাধ্যমে দেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যেতে হবে।”

চলচ্চিত্র তারকা রিয়াজ বলেন, “অর্থমন্ত্রী বলেছেন কর দেওয়া বাহাদুরি, কর দেওয়ার মাধ্যমে আমিও তা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। পদ্মা সেতুর কাজ চলছে, এ কোনো একটি সিমেন্টের বস্তা আমার টাকায় কেনা, তা নিয়ে আমি মনেপ্রাণে গর্ববোধ করি।”

গায়ক শুভ্র দেব বলেন, “বাংলাদেশে এখন কর প্রদানের পরিবেশ খুবই ভালো। নিজেদের টাকা দিয়ে আমরা পদ্মা সেতু করতে পারলে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ারও করতে পারব। আর তা করতে চাইলে সবাইকে কর দিতে হবে।”

আয়কর প্রদানে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস পালন হয়। এবার দিবসের স্লোগান ‘উন্নয়ন ও উত্তরণ, আয়করের অর্জন’।

প্রতিবার শোভাযাত্রা হলেও এবার জাতীয় নির্বাচনের আগে সেগুনবাগিচার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবন প্রাঙ্গণে শুধু আলোচনা অনুষ্ঠানই হয়।

অনুষ্ঠানে এনবিআর কর্মকর্তারা বলেন, করদাতাদের ভেতর আয়কর নিয়ে আগে যে নেতিবাচক ভাব ছিল, আয়কর মেলা ও দিবস পালনের মাধ্যমে তা দূর হয়েছে।

এনবিআরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সবাইকে আয়কর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন,

আয়কর আদায়ের পরিমাণ ১০ গুণ বাড়ালে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে যাবে।

“আমার ৩৩ বছরের চাকরি জীবনে দেখলাম, আয়কর বৃদ্ধি পেয়েছে ২৬ গুণ। ১৯৮৬ সালে আমাদের কালেকশন ছিল দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা, সেখান থেকে ২৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে অনেক বড় ফিগার হয়েছে। আরও যদি ২৬ গুণ বৃদ্ধি পায়, তাহলে এটা পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম ইকোনমি হয়ে যাবে।”

তিনি জানান, গত অর্থবছরে মোট কর সংগ্রহ হয়েছে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

“২৬ গুণ বাড়লে হবে ৭৮০ বিলিয়ন ডলার। যেখানে চীনের দেড় হাজার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুই হাজার বিলিয়ন ডলার। ২৬ গুণ না হয় ১০ গুণ হলে উচ্চ আয়ের দেশে চলে যাব।”

এনবিআর সেই লক্ষ্যে কাজ করছে জানিয়ে সিরাজুল বলেন, “করদাতাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ হয়েছে। এখন অমরা আয়কর মেলা করি, আয়কর দিবস করি। ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু পরিকল্পনা আছে, সেগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে সত্যিকারের করবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করব।”

আয়কর বিবরণী দাখিল গত দুই বছর ধরে ৪০ শতাংশ হারে বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “অ্যাকটিভ করদাতা এখন ১৫ লাখ, সেটা যখন এক কোটি হয়ে যাবে, তখন দেশের আরও বেশি উন্নয়ন হবে। কর অনুপাত ১২ শতাংশে নিয়ে যেতে পারলে অর্থনীতি মজবুত হবে।”

এনবিআর সদস্য (আন্তর্জাতিক করনীতি) কালীপদ হালদার অনুষ্ঠানে বলেন, গত বছর করদাতা ছিল ৩২ লাখ, এ বছর তা ৩৮ লাখ হয়েছে। ২০১৪ সালে ছিল মাত্র ১২ লাখ।

“মাত্র চার বছরে করদাতা বেড়েছে তিন গুণের বেশি। তবে গত ১০ বছরে প্রকৃত করদাতা বেড়েছে পাঁচ গুণ।”

অনুষ্ঠানে এনবিআর সদস্য (আয়কর) জিয়া উদ্দিন মাহমুদসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷