৪ মাসে এডিপির ১৪ শতাংশ বাস্তবায়ন

নির্বাচনের ডামাডোলে পড়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে এডিপির ১৪ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2018, 06:35 PM
Updated : 29 Nov 2018, 06:35 PM

২০১৮-১৯ অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের সঙ্গে তুলনা কররে দেখা যায়, গত অর্থবছরের একই সময়ে বাস্তবায়িত হয়েছিল প্রায় ১৫ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের জন্য প্রায় এক লাখ ৮১ হাজার কোটি টাকার এডিপি গ্রহণ করা হয়েছে। গত অর্থবছরের এডিপি‘র আকার ছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকার। অর্থাৎ এবার গতবারের চেয়ে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ ব্যয় করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।

বিশ্লেষকরা বলছেন, উন্নয়ন কাজের সঙ্গে জড়িত সব ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীরা এখন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। ফলে প্রত্যেক নির্বাচনী বছরের মতো এবারও এডিপি বাস্তবায়ন পিছিয়ে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের (জুলাই-অক্টোবর) প্রথম চার মাসে ২৪ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। চার মাসের এ বাস্তবায়ন মোট বরাদ্দের ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক ড. জায়েদ বখত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রত্যেক নির্বাচনের বছরেই এমন হয়ে থাকে।

“মূলত উন্নয়ন প্রকল্পের সাথে জড়িত ঠিকাদাকার ও কর্মকর্তাদের অনেকেই এখন জাতীয় নির্বাচনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এরফলে প্রকল্পগুলোর কাজ কিছুটা থেমে আছে। এরফলে বাস্তবায়ন কিছুটা শ্লথ দেখাচ্ছে।

তিনি বলেন, “চার মাসের বাস্তবায়নে আসলে আনুপাতিক হারে বাস্তবায়ন কিছুটা কম হলেও টাকার অংকে বরং কিছুটা বেশি হয়েছে। যদিও এবারের বাস্তবায়ন টার্গেটও বেশি। তবে জানুয়ারি মাস থেকে সংশ্লিষ্টরা আবারও কাজে মনোনিবেশ করলে বাস্তবায়নও বেড়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।”

এদিকে আইএমইডি‘র প্রতিবেদনে দেখা যায়, সর্বোচ্চ  বরাদ্দ পাওয়া দশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭ হাজার ১৭৬ কোটি টাকার কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করতে পেরেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ অংক মোট বরাদ্দের ২৮ শতাংশের বেশি।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ২১ শতাংশ বা ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা বা বরাদ্দের মাত্র ৮ শতাংশ বাস্তবায়ন করতে পেরেছে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ।

এরপর বেশি পাওয়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগ গুলোর মধ্যে যথাক্রমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ব্যয় করতে পেরেছে ১ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা বা ১৩ শতাংশ। রেলপথ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে মাত্র ৩৮১ কোটি টাকা বা বরাদ্দের মাত্র ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। সেতু বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে মাত্র ৬২২ কোটি টাকা বা বরাদ্দের প্রায় ৭ শতাংশ। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে ৯৯১ কোটি টাকা বা বরাদ্দের ১১ শতাংশ। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে ৪৪২ কোটি টাকা বা বরাদ্দের ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে ৪৬১ কোটি টাকা বা ৮ শতাংশ এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে প্রায় ২৮১ কোটি টাকা বা বরাদ্দের ৫ শতংশ।