সেবা রপ্তানির পালেও হাওয়া

পণ্য রপ্তানির মতো সেবা রপ্তানির পালেও হাওয়া লেগেছে।

আবদুর রহিম হারমাছিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2018, 05:29 PM
Updated : 18 Nov 2018, 05:48 PM

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সেবা রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ১৪১ কোটি ডলার আয় করেছে।

এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৫ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি।আর নির্ধারিত লক্ষ্যের চেয়ে প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি।

পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি ফারুক হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পণ্য রপ্তানির ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে সেবা খাতের রপ্তানিতে

“পণ্য রপ্তানি বাড়লে সেবা খাতের রপ্তানি বাড়বে-এটাই স্বাভাবিক।কেননা, এক খাত অন্য খাতের সঙ্গে পুরোপুরি সম্পর্কিত এবং নির্ভরশীল।”

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রোববার সেবা খাতের রপ্তানির হালনাগাদ যে তথ্য ইপিবি প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বিদেশে বিভিন্ন সেবা বিক্রি করে ১৪০ কোটি ৯৫ লাখ (১দশমিক ৪১ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ।

এই অংক গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৫ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি।গত বছরের এই তিন মাসে সেবা রপ্তানি থেকে মোট আয় হয়েছিল ৯০ কোটি ৬৩ লাখ ডলার।

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ।চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এ খাতের রপ্তানির লক্ষ্য ধরা আছে ১২৫ কোটি ডলার।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই তিন মাসে সেবা খাতের রপ্তানি আয়ের মধ্যে ১৩৮ কোটি ৩৯ লাখ ডলারই এসেছে সরাসরি সেবা খাত থেকে। অর্থাৎ মোট রপ্তানির ৯৮ দশমিক ১8 শতাংশই এসেছে সরাসরি সেবা খাত থেকে।

বাকিটা দেশের বন্দরগুলোতে পণ্যবাহী জাহাজগুলোর কেনা পণ্য ও সেবা এবং মার্চেন্টিংয়ের অধীনে পণ্য বিক্রির আয়।

কোনো অনাবাসীর কাছ থেকে পণ্য কিনে একই পণ্য কোনো অনাবাসীর কাছে বিক্রি করাকে মার্চেন্টিং বলে। এই প্রক্রিয়ায় মোট বিক্রি থেকে মোট ক্রয় বাদ দিয়ে নিট মার্চেন্টিং রপ্তানি আয় হিসাব করা হয়।

দেশের স্থল, সমুদ্র বা বিমান বন্দরে বিদেশি পরিবহনগুলো সেসব পণ্য ও সেবা- যেমন জ্বালানি তেল ও মেরামত সেবা- কিনে থাকে সেগুলোকে সেবা খাতের আওতায় ধরা হয়েছে। 

 

জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে সেবা খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে সরকারি পণ্য ও সেবা রপ্তানি থেকে। এ উপখাত থেকে এসেছে ৫৬ কোটি ১৭ লাখ ডলার।

অন্য উপখাতগুলোর মধ্যে ‘অন্যান্য ব্যবসায় সেবা’ থেকে এসেছে ২৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি থেকে আয় হয়েছে ১৪ কোটি ৯২ লাখ ডলার।

বিভিন্ন ধরণের পরিবহন সেবা (সমুদ্র, বিমান, রেল এবং সড়ক) থেকে ১৯ কোটি ডলার আয় হয়েছে।

আর্থিক সেবা খাত থেকে ২ কোটি ২০ লাখ ডলার এবং ভ্রমণ সেবা উপখাত থেকে ৮ কোটি ১৬ লাখ ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে।

ইপিবি চলতি অর্থবছরে সেবা খাতের রপ্তানির তিন মাসের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তথ্য প্রকাশ করলেও পণ্য রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করেছে চার মাসের (জুলাই-অক্টোবর)।

এই চার মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ১ হাজার ৩৬৫ কোটি ১৮ লাখ ডলার আয় করেছে। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৯ শতাংশ বেশি।

তিন মাসের সেবা রপ্তানি এবং চার মাসের পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ মোট আয় করেছে ১ হাজার ৫০৬ কোটি ১২ লাখ (১৫.০৬ বিলিয়ন) ডলার; প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ২১ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সেবা খাত থেকে মোট আয় হয় ৪৩৪ কোটি (৪.৩৪ বিলিয়ন) ডলার । পণ্য রপ্তানি করে আসে ৩ হাজার ৬৬৬ কোটি ৮২ লাখ ডলার।

সে হিসেবে গত অর্থবছরের পণ্য ও সেবা খাত মিলে মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ হাজার ১০০ কোটি ৭৮ লাখ ডলার।

তার আগের বছরে (২০১৬-১৭ অর্থবছর) সেবা খাত থেকে আয় হয়েছিল মোট ৩৪২ কোটি ডলার।ওই বছরে পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছিল ৩ হাজার ৪৬৫ কোটি ৫৯ লাখ ২০ হাজার ডলার।

সে হিসেবে গত অর্থবছরের পণ্য ও সেবা খাত মিলে মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ৮০৭ কোটি ৫৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি (৩৯ বিলিয়ন) ডলার।আর সেবা রপ্তানির লক্ষ্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার।