রপ্তানি নীতি অনুমোদন

তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিকারকদের পাশাপাশি সব রপ্তানিকারকদের বাংলাদেশ ব্যাংকের ইডিএফ তহবিল থেকে ঋণ নেওয়ার সুযোগ রেখে নতুন রপ্তানি নীতি অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2018, 02:04 PM
Updated : 6 Nov 2018, 02:14 PM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ২০১৮-২১ মেয়াদের রপ্তানি নীতি অনুমোদন দেওয়া হয়।

২০১৫-১৮ মেয়াদের রপ্তানি নীতির মেয়াদ গত ৩০ জুন শেষ হয়েছে। তবে নতুন রপ্তানি নীতি গেজেট আকারে প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত আগের নীতিই বহাল থাকবে।

মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা সহজ শর্ত ও স্বল্প সুদে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইডিএফ ফান্ড থেকে যেভাবে ঋণ নিতে পারেন নতুন নীতি কার্যকর হলে অন্যান্য রপ্তানিকারকরাও একই শর্তে এই ঋণ পাবেন।

“এছাড়া নতুন নীতিতে রপ্তানি পণ্যে উৎসাহব্যঞ্জক সুবিধা দেওয়ার জন্য মূল্য সংযোজন হার ৪০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে।”

দেশের রপ্তানি আয়ের ওঠা-নামায় সবসময়ই তৈরি পোশাক খাতের একটা বড় ভূমিকা থাকে (ফাইল ছবি)

রপ্তানি নীতিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত হিসেবে নতুন করে ‘ডেনিম’, ‘অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট (এপিআই) এবং বিকারক (রিয়েজেন্টসহ) জুতাকে (চামড়াজাত, অচামড়াজাত ও সিনথেটিক) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

আগের রপ্তানি নীতিতে তৈরি পোশাক ও গার্মেন্টস এক্সসরিজ, সফটওয়্যার ও আইটি অ্যানাবল সার্ভিসেস ও আইসিটি পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, জাহাজ নির্মাণ, জুতা ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্ল্যাস্টিক পণ্য, অ্যাগ্রো প্রোডাক্ট ও অ্যাগ্রো প্রসেসড পণ্য, ফার্নিচার, হোম টেক্সটাইল ও টেরিটাওয়েল এবং হোম ফার্নিশিং ও লাগেজ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত ছিল।

বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতে আগের ১৪টি পণ্যের সঙ্গে নতুন করে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, সোলার এনার্জি, কাজু বাদাম (কাঁচা এবং প্রাক্রিয়াজাতকরণ), জীবন্ত ও প্রক্রিয়াজাত কাঁকড়া এবং খেলনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানান শফিউল।

আগের রপ্তানি নীতিতে বিশেষ উন্নয়মূলক খাত হিসেবে বহুমুখী পাটজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য, সিরামিক পণ্য, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য (অটো পার্টস ও বাই-সাইকেলসহ), মূল্য সংযোজিত হিমায়িত মৎস্য, পাঁপড়, প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, অমসৃণ হীরা ও জুয়েলারি, পেপার ও পেপার প্রোডাক্টস, রাবার, রেশম সামগ্রী, হস্ত ও কারুপণ্য, লুঙ্গিসহ তাঁত শিল্পজাত পণ্য ও নারিকেল ছোবড়াকে চিহ্নিত করা হয়েছিল।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, রপ্তানি নিষিদ্ধ পণ্যের সংখ্যা আগের মতোই রাখা হয়েছে, তবে ওয়েড ব্লু চামড়াজাত থেকে প্রাপ্ত পণ্যকে রপ্তানি পণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

“শর্তসাপেক্ষে রপ্তানি পণ্যের তালিকায় নতুনভাবে ওজন স্তর ক্ষয়কারি দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুসরণ করে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি সাপেক্ষে রিকভারি, রিক্লেমিং বা রিসাইক্লেনিংকৃত ওজনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্য রপ্তানি পণ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

শফিউল বলেন, “প্লাস্টিক খাতের প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারক ও সাধারণ রপ্তানিকারক উভয়ের জন্য ইডিএফ (রপ্তানি উন্নয়ন) তহবিলে অর্থসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনে প্রয়োজনীয় মোল্ড স্থাপনে স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।”

নতুন নীতিমালা কার্যকর হলে প্লাস্টিক পণ্য ও গার্মেন্টস এক্সেসরিজ পণ্যের মান পরীক্ষা ও সনদ দেওয়ার জন্য অ্যাক্রিডিটেড ল্যাবরেটরি (অনুমোদিত পরীক্ষাগার) স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এছাড়া প্লাস্টিক পণ্যের জন্য গঠিত বিজনেস কাউন্সিলকে পূর্ণাঙ্গ ও কার্যকর প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান শফিউল আলম।