বিতরণ ন্যায্য হলে কেউ গরিব থাকবে না: খাদ্যমন্ত্রী

সরকার হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকায় যে চাল দিচ্ছে তার ন্যায্য বিতরণ নিশ্চিত করা গেলে দেশে হতদরিদ্র খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2018, 05:55 PM
Updated : 18 Oct 2018, 05:55 PM

ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার দেশের উন্নয়ন লক্ষ্য ও খাদ্য অধিকার আইনের প্রাসঙ্গিকতা শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই অভিমত প্রকাশ করেন।

কামরুল বলেন, “সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অংশ হিসাবে যে চাল বিতরণ হচ্ছে সেখানে কিছু দলীয়করণ হচ্ছে স্বীকার করছি। কিন্তু এই প্রকল্পের মাধ্যমে আড়াই কোটি মানুষের কাছে যে খাবার পৌঁছে যাচ্ছে সেটাও বাস্তব।”

খাদ্য অধিকার আন্দোলন আয়োজিত এই সভায় মূল প্রবন্ধে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও দেশের মোট জনসংখ্যার ১২.৯ শতাংশ চাহিদা মতো খাবার পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, আয়-বৈষম্যের কারণে শীর্ষ ১০ ভাগ ধনী পরিবারের আয় মোট জাতীয় আয়ের ৩৮ শতাংশ এবং নিম্নে অবস্থানকারী ১০ ভাগ অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠী মোট জাতীয় আয়ের মাত্র ১ শতাংশের মালিক।

সবার খাবারের অধিকার নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ‘খাদ্য অধিকার আইন’ প্রণয়নে উদ্যোগ গ্রহণে সরকারের কাছে দাবি জানান আয়োজকরা।

খাদ্যমন্ত্রী কামরুল বলেন, সব পক্ষ সচেতন হলে ১০ টাকা কেজি দরে সরকার যে চাল বিতরণ করে তাতে আরও বেশি মানুষের উপকৃত হওয়া সম্ভব। এজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তাদেরকে আরও আন্তরিক হতে হবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের বিষয়টি তুলে ধরেন কামরুল।

তিনি বলেন, “দেশে জনসংখ্যা যখন সাড়ে ৭ কোটি ছিল তখন খাদ্যের জোগান দিতে হিমশিম খেতে হত। বার্ষিক উৎপাদন ছিল মাত্রা এক কোটি টন। এখন বার্ষিক উৎপাদন চার কোটি টন। রাস্তাঘাটে আর ভিক্ষুক চোখে পড়ে না।

“ওএমএসের ট্রাকে মোটা চাল দেওয়া হচ্ছে বলে সেখানে মানুষ ভিড় করে না। কারণ তাদের চিকন চাল খাওয়ার সামর্থ্য হয়েছে।।”

খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও ‘পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে এই সভায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী রওশন আক্তার, বিআইডিএসের  সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদও বক্তব্য রাখেন।

নাজনীন আহমেদ বলেন, খাবারের অপচয় রোধ করেও খাদ্য নিরাপত্তা অনেকাংশে নিশ্চিত করা যায়। শুধু ধনী পরিবারে নয়; গবেষণায় দেখা গেছে গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র পরিবারগুলোতেও ৫ দশমিক ৫ শতাংশ খাবার অপচয় হচ্ছে। ফসল উপাদন পর্যায়েও ১০ থেকে ১১ শতাংশ খাবার বিনষ্ট হচ্ছে। খাদ্যের অপচয় রোধে প্রশিক্ষণ দরকার।

খলীকুজ্জমান বলেন, আইন ছাড়া নীতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। মানবকেন্দ্রিক উন্নয়ন সম্ভব হলে প্রত্যেক মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। যা আইন ছাড়া সম্ভব নয় এবং পাশাপাশি দরকার যথাযথ বাস্তবায়ন।

বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান আয়োজনে সহায়তায় ছিল ইকো কোআপারেশন-এর সিভিক এনগেজমেন্ট এলায়েন্স প্রোগ্রাম ও ক্রিশ্চিয়ান এইড।