বিটুমিন বাদ দিয়ে কংক্রিটের সড়ক করুন: মন্ত্রী

এখন থেকে কংক্রিটের সড়ক নির্মাণে জোর দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2018, 01:48 PM
Updated : 23 Sept 2018, 01:48 PM

রোববার ঢাকার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘বাংলাদেশে মানসম্মত সড়ক অবকাঠামো বিনির্মাণ : সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, এটা প্রধানমন্ত্রী চান।

এখন দেশের মহাসড়কগুলো টেকসই না হওয়ার পেছনে বিটুমিনে তৈরি করাকেই দায়ী করেন মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, “পানি বিটুমিনের শত্রু। এ বছর প্রায় সাত মাস ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী বছর আরও বেশি হতে পারে। বৃষ্টির পানিতে বিটুমিনের রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই এখন থেকে আমাদের কংক্রিটের রাস্তা তৈরি করতে হবে।”

সরকার প্রধানের চাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “বিভিন্ন সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় আমাকে বলেছেন কংক্রিটের সড়ক নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করতে। তাই এখন থেকে আপনারা বিটুমিনের সড়কের পরিবর্তে কংক্রিটের সড়ক নির্মাণের জন্য প্রকল্প দলিল তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাবেন।”

বিটুমিনের চেয়ে কংক্রিটের সড়ক নির্মাণে ব্যয় বেশি হলেও তা টেকসই হয় বলে খরচ পুষিয়ে যাবে বলে মনে করেন মুস্তফা কামাল।

“কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণে খরচ একটু বেশি হলেও ১০ বছর পর্যন্ত ওই রাস্তায় হাত দিতে হবে না। ওই হিসাব করলে দেখা যাবে, আসলে বিটুমিনের চেয়ে বেশি খরচ পড়বে না। টেকসই উন্নয়নের জন্য কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণের দিকেই যেতে হবে।”

দেশের অধিকাংশ সড়কই বিটুমিনের; বৃষ্টিতে এই সড়কের ক্ষয়ের প্রবণতাও বেশি

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সড়ক-মহাসড়ক বিভাগের কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “আপনারা কিসের আশায় বিটুমিনের সড়ক নির্মাণে আগ্রহী? এটা ভুলে যান। কংক্রিট সড়ক নির্মাণ করে মানুষকে মুক্তি দিন।

“২০ বছর মেয়াদি রাস্তা নির্মাণ করতে পারে এমন ঠিকাদার নিয়োগ দিতে হবে। এর ফলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে।”

দেশের সড়কগুলো নষ্ট হওয়ার আরেকটি কারণ হিসেবে গাড়িগুলোর অতিরিক্ত বোঝা নিয়ে চলাচলকে চিহ্নিত করে তা নিয়ন্ত্রণের উপরও জোর দেন তিনি।

ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা যেন সহজ হয়, রাস্তা নির্মাণে সেদিকে দৃষ্টি দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি পরামর্শ দেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

তিনি বলেন,  “আমরা বিদেশে গেলে দেখি তাদের মহাসড়কগুলোতে কোনো সিগনাল নেই। কিন্তু আমাদের দেশে ওইভাবে মহাসড়ক তৈরি করা যাচ্ছে না।”

সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সীমাবদ্ধতা স্বীকার করে মুস্তফা কামাল গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে আসার জন্য একটি রূপরেখা তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, “প্রয়োজনে একটি সুদূরপ্রসারী নকশা তৈরি করতে হবে যেটি এখন থেকে ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন শুরু হবে।

অনুষ্ঠানে বুয়েটের অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, “মহাসড়কের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ওই সড়কে কোনো সিগনাল থাকবে না। কিন্তু আমাদের দেশে সিগনাল ছাড়া কোনো মহাসড়ক নেই।”

মহাসড়কের মোড়গুলোকে প্রধান সমস্যা হিসিবে চিহ্নিত করে গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোর জন্য এখন থেকেই জমি অধিগ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি পরামর্শ দেন তিনি।

পরিকল্পনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইএমইডি সচিব মফিজুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথের (সওজ) প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান, লেখক-কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ এবং স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন।