চূড়ান্ত হিসাবে প্রবৃদ্ধি ৭.৮৬%, মাথাপিছু আয় ১৭৫১ ডলার

গত অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলিত হিসাবের চেয়ে বাড়লেও মাথাপিছু আয় সামান্য কমেছে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2018, 11:04 AM
Updated : 19 Sept 2018, 04:40 AM

২০১৭-১৮ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে রেকর্ড ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ হতে পারে বলে প্রাথমিক হিসাবে প্রাক্কলন করা হয়েছিল।

আর চূড়ান্ত হিসাবে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১৭৫১ ডলার, যা ১৭৫২ ডলার হতে পারে প্রাথমিক হিসাবে বলে ধারণা করা হয়েছিল।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ; মাথাপিছু আয় ছিল ১৬১০ ডলার।

মন্ত্রী বলেন, “এ বছর আমাদের বড় কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় আসেনি। কৃষিতে অভাবনীয় সফলতার কারণে আমাদের এ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। শিল্প ও বিদ্যুৎ খাত ভালোভাবে এগিয়েছে, তাই সেখানেও আমাদের অবস্থান ভালো। তবে সেবা খাতে আগের মতোই অবস্থা।”

মাথাপিছু আয় প্রাক্কলনের তুলনায় কমে আসা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এটা হয়েছে মূলত ডলারের বিপরীতে টাকা মান হারানোর কারণে।  প্রবৃদ্ধি বাড়লেও ডলারের হারের কারণে প্রাথমিক হিসাবের তুলনায় ১ ডলার কম হয়েছে।

অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের (জুলাই-মার্চ) তথ্য বিশ্লেষণ করে গত এপ্রিলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো যখন প্রাথমিক হিসাব প্রকাশ করেছিল, তখন ১ ডলারে ৮০ টাকা পাওয়া গেলেও এখন ডলারের দাস উঠেছে ৮৪ টাকায়।

মন্ত্রী বলেন, টাকার হিসাবে বর্তমানে মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫১৮ টাকা।

চূড়ান্ত হিসাবে গেল অর্থবছরের জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ২৭৪ বিলিয়ন ডলারে। এর আগের অর্থবছরে জিডিপর আকার ২৫০ বিলিয়ন ডলার ছিল। তার আগের অর্থবছরের ছিল ২২১ বিলিয়ন ডলার।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ২০১৮ সালের হিসাবে দেশে দারিদ্র্যোর হার আরও কিছুটা কমে ২১ দশমিক ৮ শতাংশ হয়েছে। আগের বছর দারিদ্র্যের হার ছিল ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ।

এই হিসাবে দেশে হতদরিদ্রের হার কিছুটা কমে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে, যা আগের বছর ১২ দশমিক ১ শতাংশ ছিল।

মন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছর দেশে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল জিডিপির ৩১ শতাংশ। জাতীয় এই বিনিয়োগের মূল চালিকা শক্তি ছিল সরকারি বিনিয়োগ।

“সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি হিসাবে কাজ করে বেসরকারি খাত। কোনো দেশেই মোট বিনিয়োগে বেসরকারি খাতের অবদান ৮০ শতাংশের নিচে হয় না।

“আমি লক্ষ্য করলাম, আমাদের এখানে প্রাইভেটে সেক্টর যে পরিমাণে বিনিয়োগ করার কথা সে পরিমাণ বিনিয়োগ করে না। আমরা যদি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে না পারি, তাহলে তারা বিনিয়োগ করবে না।”

প্রায় এক দশক ৬ শতাংশের বৃত্তে ‘আটকে’ থাকার পর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ‘ঘর’ অতিক্রম করে। এরপর গত দুই অর্থবছর ধরেই প্রবৃদ্ধির হার ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।